যে ৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান: আছে রাফাল, সুখোই

কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহতের পর প্রতিশোধমূলক অভিযানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়েছে ভারত। এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করে।
পাল্টা আক্রমণের কথা জানিয়েছে পাকিস্তানও। তাদের দাবি তারা ভারতের বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্বীকার বা অস্বীকার কিছুই করা হয়নি– ফলে এই বক্তব্য নিয়ে বেশ অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে।
ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের বরাতে স্থানীয় গণমাধ্যম ও পশ্চিমা কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, ভারত সীমান্তের ভেতরেই দুই বা তিনটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা পাঁচটি যুদ্ধবিমান ও একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এসবের মধ্যে রয়েছে—তিনটি রাফায়েল, একটি মিগ-২৯, একটি সুখোই এসইউ-৩০ যুদ্ধবিমান এবং একটি হেরন ড্রোন।
তবে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, এসব দাবি তারা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবালসিকিউরিটি অর্গানাইজেশন-এর পরিচালক জন পাইক বলেন, এসব বিমান ও ড্রোন মাটিভিত্তিক বা আকাশভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্রে ভূপাতিত হয়ে থাকতে পারে। তিনি বলেন, 'পাকিস্তানের কাছে এই দুই ধরনের অস্ত্রই আছে।'
এখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি অনুযায়ী ভূপাতিত বিমানগুলো সম্পর্কে কিছু তথ্য:

রাফাল
ফ্রান্সের দাসো অ্যাভিয়েশন নির্মিত এই যন্ত্রটি একটি দুই ইঞ্জিনচালিত যুদ্ধবিমান, যা বিমানবাহী রণতরী বা স্থলঘাঁটি—উভয় স্থান থেকেই উড়ে যেতে পারে।
চলতি বছরের এপ্রিলেই ভারত সরকার ফ্রান্সের সঙ্গে আরও ২৬টি রাফাল কেনার চুক্তি করে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে নৌবাহিনীতে যুক্ত হবে। এর আগে ভারত ৩৬টি রাফাল কেনে।
কাশ্মীরের উইয়ান গ্রামে পাওয়া একটি জ্বালানি ট্যাঙ্কের ছবি বিশ্লেষণ করে অস্ত্র গবেষক ট্রেভর বল জানান, এটি রাফাল বা মিরাজের জ্বালানি ট্যাঙ্ক হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তা শত্রুর হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

মিগ-২৯
সোভিয়েত যুগের তৈরি এই যুদ্ধবিমানটি মূলত মার্কিন এফ-১৬ মোকাবিলার জন্য তৈরি করা হয়। ১৯৮০-এর দশকে এটি সোভিয়েত সেনাবাহিনীতে যুক্ত হয়। পরবর্তীতে বহু দেশ এটি ব্যবহার করে।
এটি আকাশযুদ্ধে উপযোগী হলেও কিছু সংস্করণে ভূমিতে হামলার সক্ষমতাও যোগ হয়েছে।
জন পাইক বলেন, এটি অনেক সময় এফ-১৬-এর বিকল্প হিসেবে আন্তর্জাতিক অস্ত্রবাজারে প্রতিযোগিতায় নামে, তবে বেশিরভাগ সময়েই পরাজিত হয়।

সুখোই এসইউ-৩০
রাশিয়ার সুখোই কোম্পানি ১৯৯০-এর দশকে এই বিমানটি তৈরি করে। এটি আকাশযুদ্ধ এবং স্থল হামলার উভয় মিশনের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।
এটি মিগ-২৯-এর চেয়ে আকারে বড়—লম্বায় প্রায় ৭২ ফুট, ডানার প্রস্থ ৪৮ ফুটের বেশি। তুলনায় মিগ-২৯-এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৭ ফুট, আর ডানার প্রস্থ ৩৭ ফুটের মতো।

হেরন ড্রোন
ইসরায়েলি প্রযুক্তিতে নির্মিত এই ড্রোনগুলো মানববিহীন বিমান হিসেবে পরিচিত। এটি নজরদারি ও গোয়েন্দা কাজে ব্যবহৃত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের কাছে এর অন্তত একটি সংস্করণ রয়েছে।