স্মার্টফোন, ল্যাপটপসহ চীনা ইলেকট্রনিক পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা বেশি দিনের জন্য নয়: ট্রাম্প প্রশাসন

স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্য আমদানিতে চীনের ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা খুব বেশি দিন থাকবে না বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তারা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, "কেউই ছাড় পাবে না।"
রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'ট্রুথ সোশাল'-এ এক পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, "শুল্কে কোনো 'ছাড়' দেওয়া হয়নি। এই পণ্যগুলো বিদ্যমান ২০ শতাংশ ফেন্টানিল শুল্কের আওতাধীন, এগুলোকে কেবল এক ধরনের শুল্ক থেকে আরেক ধরনে স্থানান্তর করা হয়েছে।"
ওই পোস্টে তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র শিগগিরই সেমিকন্ডাক্টর খাতসহ পুরো ইলেকট্রনিক্স সরবরাহ শৃঙ্খল নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তাভিত্তিক একটি বাণিজ্য তদন্ত শুরু করবে।
ট্রাম্প বলেন, "আমরা অন্য দেশের কাছে—বিশেষ করে চীনের মতো বৈরী বাণিজ্য অংশীদারদের কাছে আর জিম্মি হয়ে থাকব না।"
এর আগে গত শুক্রবার হোয়াইট হাউস জানায়, চীনের কিছু ইলেকট্রনিক পণ্যকে পাল্টা শুল্কের আওতা থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর আশা তৈরি হয়। আরোপিত পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত হওয়ায় অ্যাপল ও চিপ নির্মাতা এনভিডিয়ার শেয়ারদর বাড়ার সম্ভাবনা দেখা স্টক মার্কেটে।
এদিকে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অব্যাহতির এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের 'ভুল ও একতরফা পাল্টা শুল্ক নীতি' সংশোধনের পথে একটি ছোট পদক্ষেপ মাত্র। তারা পুরো শুল্ক ব্যবস্থাই বাতিল করার দাবি জানায়।
এ বিষয়ে চায়না সেন্টার ফর ইনফরমেশন ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্টের প্রেসিডেন্ট ঝাং লি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম চায়না ডেইলিকে বলেন, "এই শুল্ক অব্যাহতিই প্রমাণ করে, যুক্তরাষ্ট্রের বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য চীন কতটা গুরুত্বপূর্ণ, এই কোম্পানিগুলো উৎপাদন ও উদ্ভাবনের জন্য চীনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।"
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক রোববার জানান, আগামী দুই মাসের মধ্যে চীনের গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিপণ্য ও সেমিকন্ডাক্টরের ওপর আলাদা করে নতুন শুল্ক আরোপ করা হবে।
লুটনিক বলেন, আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যে স্মার্টফোন, কম্পিউটারসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যের ওপর 'বিশেষ খাত বা লক্ষ্যভিত্তিক শুল্ক' (স্পেশাল ফোকাস-টাইপ অফ ট্যারিফ) আরোপ করবেন ট্রাম্প। এর পাশাপাশি সেমিকন্ডাক্টর ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাতকেও পৃথক খাতভিত্তিক শুল্কের আওতায় আনা হবে। তিনি জানান, এসব নতুন শুল্ক ট্রাম্প ঘোষিত 'পাল্টা শুল্ক' নীতির বাইরেই থাকবে।
এবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লুটনিক আরও বলেন, "তিনি (ট্রাম্প) বলছেন—এগুলো পাল্টা শুল্ক থেকে অব্যাহতি পেলেও সেমিকন্ডাক্টরের জন্য নির্ধারিত নতুন শুল্কের আওতায় আসবে এবং এটি আগামী এক বা দুই মাসের মধ্যেই তা কার্যকর হবে।"
এই শুল্কের ফলে সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলোর উৎপাদন আবারও যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করে লুটনিক বলেন, "এই পণ্যগুলো জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত। তাই এগুলোর উৎপাদন আমাদের দেশেই হওয়া উচিত।"