ফোনকলের আগে ট্রাম্পকে এক ঘণ্টা অপেক্ষায় রেখেছেন পুতিন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য নির্ধারিত ফোন কলের আগে এক ঘণ্টারও বেশি সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
এই ঘটনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। তবে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একটি ভিডিও, যেখানে তিনি ফোন কলে দেরি করার বিষয়টি হাস্যকরভাবে উড়িয়ে দেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার মস্কোয় এক বার্ষিক শিল্পপতিদের সভায় ব্যস্ত ছিলেন পুতিন। রাশিয়ার সময় বিকেল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত চলা ওই অনুষ্ঠানের মাঝেই তাঁকে ফোন কলে দেরি হওয়ার কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, এক পর্যায়ে অনুষ্ঠান উপস্থাপক পুতিনকে জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে নির্ধারিত ফোন কলে দেরি হচ্ছে। জবাবে পুতিন কেবল মুচকি হাসেন এবং বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেওয়ার ভঙ্গিতে হাত উঁচিয়ে ইঙ্গিত দেন।
অনেকেই ঘটনাটিকে ট্রাম্পের জন্য 'অপমানজনক' বলে উল্লেখ করেছেন। কেউ কেউ মনে করছেন, এটি পুতিনের কৌশলগত বার্তা—ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে তা বোঝানোর জন্য।
একজন টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'ট্রাম্প-পুতিন সম্পর্কের ক্ষমতার ভারসাম্য কোথায়, তা এ ঘটনার মাধ্যমে পরিষ্কার হলো।'
আরেকজন মন্তব্য করেন, 'এটি ট্রাম্পের জন্য কঠিন পরীক্ষা। তার ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী এমন অপমানের পর তিনি প্রতিক্রিয়া জানাবেনই। কিন্তু যদি কোনো প্রতিক্রিয়া না দেন, তবে বিষয়টি পরিষ্কার—তিনি পুতিনের সামনে নতজানু।'
কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ট্রাম্প কি পুতিনের প্রতি একইরকম আচরণ করবেন, যেমনটা তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে করেছিলেন?
একজন লেখেন, 'প্রশ্ন হলো, ট্রাম্প কি ওভাল অফিসের সেই আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতেই থাকবেন, নাকি ক্যামেরার আড়ালে তাঁর শক্তিমান ভাবমূর্তি টিকিয়ে রাখতে পারবেন না?'
তবে এক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, ফোন কলে দেরি হওয়ার যে খবর ছড়িয়েছে, তা ভুল অনুবাদের ফল। তার ভাষায়, 'পুতিন আসলে মজা করছিলেন, কারণ অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বলেছিলেন, সন্ধ্যা ৬টায় ফোন কল হওয়ার কথা। তখন পুতিন হাসতে হাসতে বলেন, "ওসব শুনো না, ওটা ওর কাজ।"'
শেষ পর্যন্ত কি ফোনালাপ হয়েছে?
দ্য সান জানায়, নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর বিকেল ৫টার দিকে ক্রেমলিনে পৌঁছান পুতিন। এরপর তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টার ফোন কলে অংশ নেন।
এ সময় ট্রাম্প ইউক্রেনে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানালেও পুতিন তা প্রত্যাখ্যান করেন। তবে তিনি ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর হামলা সীমিত রাখার বিষয়ে সম্মতি দেন বলে ব্লুমবার্গ-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।