স্যান্ডেল কি শিল্প হতে পারে? প্রস্তুতকারী জার্মান কোম্পানি বলছে হ্যাঁ, কিন্তু আদালতের না

জার্মানির পাদুকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বেরকিনস্টকের স্যান্ডেল শিল্প হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে কি-না, এমন প্রশ্নে গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) জার্মানির ফেডারেল কোর্ট অব জাস্টিস বলেছেন, এগুলো কেবলই আরামদায়ক জুতো। এগুলো কোনো শিল্প নয়।
বেরকিনস্টকের প্রধান কার্যালয় জার্মানির লিনজ আম রাইন শহরে। পাদুকা তৈরিতে প্রতিষ্ঠানটির ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। এটি ১৭৭৪ সাল থেকে পাদুুকা তৈরি করে আসছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তাদের স্যান্ডেলগুলোর আদলে স্যান্ডেল তৈরি করে বিক্রি করায় এটি তিনটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে।
প্রতিষ্ঠানটি তাদের স্যান্ডেলগুলোকে 'ফলিত শিল্পের কাজ' এবং কপিরাইট-সুরক্ষিত হিসেবে দাবি করে। তাদের কথা- কেউ এগুলো নকল বা অনুকরণ করতে পারবে না।
জার্মান আইন অনুযায়ী, সাধারণ কোনো পণ্যের তুলনায় শিল্পকর্মকে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি হিসেবে অনেক বেশি সুরক্ষা দেওয়া হয়।
কোম্পানিটি চেয়েছিল যে আদালত এই নির্দেশ দিক যাতে প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলো তাদের স্যান্ডেল আর নকল না করে। সেইসঙ্গে এও চেয়েছিল যে নকল করে বানানো যেসব স্যান্ডেল বর্তমানে বাজারে রয়েছে, কিংবা বিক্রি হয়েছে সেগুলো যাতে প্রত্যাহার ও ধ্বংসের আদেশ দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার জার্মানির সর্বোচ্চ আদালতে মামলাটির শুনানি হওয়ার আগে দুটি নিম্ন আদালতে শুনানি হলেও বিষয়টি সুরাহা হয়নি। পরে মামলাটি গড়ায় ফেডারেল কোর্ট অব জাস্টিস-এ।
জার্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএ জানিয়েছে, জার্মানির কোলন শহরের একটি আঞ্চলিক আদালত প্রাথমিকভাবে জুতাগুলোকে ফলিত শিল্পকর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আদেশ জারি করেন। কিন্তু কোলনের উচ্চ আদালত আপিল শুনানি শেষে ওই আদেশ বাতিল করেন।
আপিল আদালতের পক্ষ থেক বলা হয়, চওড়া ফিতার এ স্যান্ডেলগুলোতে কোনো শৈল্পিক কৃতিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
পরে ফেডারেল কোর্ট অব জাস্টিস আপিল আদালতের রায় বহাল রাখেন এবং মামলাটি খারিজ করে দেন। রায়ে আদালত বলেন, একটি পণ্যের ডিজাইন যদি প্রযুক্তিগত প্রয়োজন বা নিয়ম দ্বারা নির্ধারিত হয়, তবে তা কপিরাইট-সুরক্ষিত হতে পারে না।
আদালত আরও বলেন, কোনো কাজকে ফলিত শিল্প হিসেবে কপিরাইট সুরক্ষা পেতে ডিজাইনটি যথেষ্ট অনন্য হতে হবে যাতে এটি যে স্বতন্ত্র, তা প্রকাশ পায়।
অনুবাদ: রেদওয়ানুল হক