হামলার সময় ট্রাম্পের কাছ থেকে কয়েক ফুট দূরে ছিলেন তিনি, জানালেন কী ঘটেছিল তখন

আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারসভায় হামলার শিকার হয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামলাকারীর বন্দুকের গুলি তার ডান কান ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বাটলার শহরে শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় হামলার শিকার হন ট্রাম্প। এ সময় তার কাছ থেকে মাত্র কয়েক ফুট দূরে ছিলেন দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রবীণ ফটোগ্রাফার ডো মিলস।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ঘটনাটি তিনি সাংবাদিক ভিক্টর ম্যাদারের কাছে বর্ণনা করেছেন। তার এই বর্ণনা তুলে ধরেছে নিউইয়র্ক টাইমস। চলুন এই প্রত্যক্ষদর্শীর মুখ থেকে জেনে নেওয়া যাক তিনি কি দেখেছেন-
আপনি কী দেখেছেন এবং শুনেছেন?
খুব সুন্দর একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। ট্রাম্পের হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক এতে যোগ দিয়েছিলেন। যথারীতি সমাবেশস্থলে এলেন ট্রাম্প, তারপর কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়লেন। ঠিক যেমনটা তিনি অন্যান্য সমাবেশেও করে থাকেন।
সমাবেশস্থলে অসংখ্য ফটোগ্রাফারও ছিলেন। সম্ভবত আমাদেরই চারজন ফটোগ্রাফার ছিলেন সেখানে। তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে মাত্র দুয়েক ফুট দূরে ছিলেন। আমরা আমাদের মতো করে ছবি তুলছিলাম। ভিড়ের কারণে ছবি তোলার সময় আমাদের একে-অপরের কনুই ও গায়ের সঙ্গে ধাক্কা লাগছিল।
এরপর আচমকাই আমার কানে তিন-চারবার সজোরে ফট ফট শব্দ ভেসে এল। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটি হয়ত কোনো গাড়ির শব্দ হতে পারে। কিন্তু শেষে দেখলাম, কোনো গাড়ি নয়, আসলে শব্দটি ছিল বন্দুকের।
আমি তখনও ছবি তুলছিলাম। তিনি (ট্রাম্প) যখন ডায়াসের নিচে পড়ে গেলেন, তখন আমার মনে হলো 'কিছু একটা ঘটেছে।'
সাথে সাথে ট্রাম্পের সশস্ত্র দেহরক্ষীরা হুড়োহুড়ি করে ট্রাম্পকে চারপাশ থেকে এমনভাবে ঘিরে রাখলেন, যাতে আর কেউ তাকে দেখতে না পায়। তাদের কেউ একজন তখন ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলছিলেন, 'স্যার, স্যার, স্যার।'
পর মুহূর্তেই কাউন্টার-স্নাইপার ও যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিক্রেট সার্ভিস) সদস্যরা রাইফেল হাতে নিয়ে মঞ্চে উঠে আসে।
আমি যাতে ট্রাম্পকে একটু ভালোভাবে দেখতে পারি, সেজন্য মঞ্চের এক পাশ থেকে অন্য পাশে সরে যাই। এরপর দেখলাম ট্রাম্প উঠে দাঁড়ালেন এবং তার মুষ্টিবদ্ধ হাত উঁচিয়ে ধরলেন।
আমি তার মুখমণ্ডলে রক্ত দেখতে পেলাম। আমি ছবি তুলেই যাচ্ছিলাম। ওই মুহূর্তে ট্রাম্পকে একইসঙ্গে উদ্ধত ও খুবই হতবাক লাগছিল।
পরে সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা সেখান থেকে ট্রাম্পকে নিয়ে তার গাড়িতে উঠিয়ে দেয়।
এরপর কি হলো?
এরপর আমি দেখলাম লোকজন চিৎকার করছে এবং শুনতে পেলাম ভিড়ের মধ্যে একজনকে গুলি করা হয়েছে।
আমাদের প্রায় ৩০ মিনিট পর বাইরে আসি। তখন দেখলাম সমাবেশের মাঠে কেবল প্লাস্টিকের বোতল, সেলফোন ও একটি মোটরচালিত হুইলচেয়ার পড়ে রয়েছে।
অনুবাদ: রেদওয়ানুল হক