রাফাহ হামলায় ‘পুড়ে ছাই’ বাবা ও শিশুর লাশ, আলাদা করা যায়নি

ইসরায়েলি বাহিনী রোববার (২৬ মে) গাজার উত্তরাঞ্চলের শহর রাফাহর তাল আস-সুলতান অঞ্চলের একটি আশ্রয় শিবিরে বিমান হামলা চালানোর একদিন পরেই নতুন করে বিমান হামলা চালানো শুরু করেছে।
সোমবার (২৭ মে) রাফাহর তাল আস-সুলতান, সৌদি, তাল জারুব এবং আল-হাশাশিন সহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে নতুন করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এতে ৪৫ জনের মতো নিহত হয়েছে যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কর্পস এর গাজা বিষয়ক জরুরি সহায়তা প্রদানকারী দলের পরিচালক জাভেদ আলি হামলায় ৪৫ জনের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি হামলার ভয়াবহতা জানাতে গিয়ে একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "বিমান হামলার শব্দে আমরা হাসপাতালে ছুটে যাই এবং পৌঁছানোর প্রায় পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমরা দেখতে পাই, অ্যাম্বুলেন্স আসতে শুরু করেছে। আমার মনে হয় মোট ৭৫ জনের মতো রোগী ছিল। সেই ৭৫ জনের মধ্যে ২৫ জনের অবস্থা ছিল গুরুতর।"
জাভেদ আলি আরো বলেন, "আমি একজন বাবার মৃতদেহ দেখেছি যিনি তার প্রায় তিন বছর বয়সী সন্তানকে জড়িয়ে ধরে ছিলেন। তারা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমরা তাদের আলাদা করতে পারিনি। তাই আমাদের দুজনকে বডি ব্যাগে একসাথে রাখতে হয়েছিল,"
আলি বলেন, "এটি খুব কঠিন একটি কাজ ছিল।"
হামাস রোববার রাফাহ থেকে তেল আবিবের দিকে আটটি রকেট ছুড়েছিল যা জানুয়ারি পর থেকে ইসরায়েলি কোন শহরে প্রথম দূরপাল্লার হামলা ছিল। এর পরেই রোববার রাতে রাফাহর তাল আস-সুলতান অঞ্চলের একটি আশ্রয় শিবিরে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা দুইজন 'জ্যেষ্ঠ হামাস সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে' এবং 'এ অঞ্চলে বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্ত করছে'।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ ঘটনাকে 'ট্র্যাজেডি' বলে অভিহিত করেছেন।
তিন সপ্তাহ আগে রাফাহতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী স্থল অভিযান শুরু করার পর থেকে প্রায় ৮ লাখ মানুষ রাফাহ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও কয়েক হাজার মানুষ এখনো তাল আস-সুলতান, সৌদি, তাল জারুব এবং আল-হাশাশিন সহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করছিল।