লুই ভিতোঁর যে ব্যাগের দাম ৩০০০ ডলারেরও বেশি!

এবার বাজারে এলো লুই ভিতোঁর স্যান্ডউইচ ব্যাগ। যার দাম তিন হাজার ডলারেরও বেশি।
ডিজাইনার ক্লাসিক পেপার স্যান্ডউইচ ব্যাগ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই ব্যাগের ডিজাইন করেছেন, তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে স্যান্ডউইচ ব্যাগ।
সাধারণত স্যান্ডউইচ ব্যাগ বলতে খয়েরি রঙের মোটা কাগজের ঠোঙাকে বোঝায়। যার মুখ মুড়ে সেলো টেপ আটকানো থাকে।
এবার বিলাসবহুল ও বিশ্বখ্যাত ফরাসি এই ফ্যাশন সংস্থার জন্য ফ্যারেল উইলিয়ামস হুবহু এই ডিজাইনের একটি ব্যাগ তৈরি করেছে ।
বিখ্যাত গীতিকার ও ডিজাইনার উইলিয়ামস গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফরাসি বিলাসবহুল এই ফ্যাশন হাউসের পুরুষদের ফ্যাশন বিভাগের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর মনোনীত হয়েছিলেন।
এই বিখ্যাত ব্র্যান্ডের হয়ে উইলিয়ামস প্রথম যে সব ডিজাইন প্রকাশ করেছিলেন তার একটি এই ব্যাগ।
গত জুনে প্যারিসের পন্ট নিউফে উইলিয়ামসের প্রথম প্রদর্শনীর সময় মডেলদের হাতে কাগজের পরিবর্তে গরুর চামড়া দিয়ে তৈরি বড় স্যান্ডউইচ ব্যাগের আদলের একটি ক্লাচ ব্যাগ দেখা যায়। যার রং ছিল সাধারণ শপিং ব্যাগের মতো।
এছাড়া ব্যাগটিতে নীল রঙের আইকনিক লুই ভিতোঁ লেখা এবং নীল বেল্ট রয়েছে। সবমিলিয়ে ব্যাগটিকে স্যান্ডউইচ বা অন্যান্য সামগ্রী রাখার ব্যাগ বলে ভুল হবে যে কারোর।
ব্যাগটি ৩০ সেন্টিমিটার দীর্ঘ, উচ্চতা ২৭ সেন্টিমিটার এবং প্রস্থ ১৭ সেন্টিমিটার। এর ভেতরে দুটি পকেট রয়েছে। এছাড়া চেইন দেওয়া একটি পকেটও রয়েছে ভেতরে। এই ব্যাগে আবার লুই ভিতোঁর ঐতিহ্যবাহী প্রতীক 'মেজন ফন্দে এন ১৮৫৪' লেখাও রয়েছে।
গত ৪ জানুয়ারি ব্র্যান্ডটির ওয়েস্ট হলিউড পপ-আপ স্টোরে ওই ব্যাগটিকে নিজেদের বিশেষ সেল উপলক্ষে বিক্রির জন্য রেখেছিল ফ্যাশন সংস্থাটি।
সেখানেই জানা গেছে ব্যাগটির খুচরা বিক্রয় মূল্য ৩ হাজার ১৩০ ডলার। অর্থাৎ, বাংলাদেশি টাকায় এর দাম প্রায় ৩ লাখ ৪৪ হাজারের বেশি।
তবে এর আগেও অনেকবার লুই ভিতোঁ দৈনন্দিন (সাধারণ ও সস্তা) ব্যবহার্য জিনিসের ডিজাইনের অনুকরণে তাদের বিভিন্ন পণ্যের ডিজাইন করেছে।
২০০৭ সালের বসন্ত-গ্রীষ্মের কালেকশনে ফ্যাশন হাউসটি বিশ্বব্যাপী বাজেটবান্ধব চেকার লাগানো প্লাস্টিক লন্ড্রি ব্যাগের অনুকরণে তাদের নতুন ব্যাগের ডিজাইন করে।
২০২২ সালে তারা পেইন্ট ক্যানের অনুরূপ একটি ক্রসবডি ব্যাগ বাজারে আনে (এতে ধাতব হ্যান্ডেলও ছিল)। এছাড়া, পুরো ব্যাগটি ছিল লুই ভিতোঁর আইকনিক বিভিন্ন প্রতীক দিয়ে সজ্জিত।
পেইন্ট ক্যান ব্যাগটি ডিজাইন করেছিলেন লুই ভিতোঁর প্রয়াত ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর ভার্জিল আব্লোহ।
আব্লোহ ২০২১ সালে ডিজাইন ম্যাগাজিন 'আইকন' এর কাছে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে শিল্পী মার্সেল ডুচ্যাম্পকে তার নায়ক হিসেবে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, মার্সেল ডুচ্যাম্প দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসগুলোকে শিল্পে রূপান্তরিত করার জন্য বিখ্যাত।
তবে শুধু লুই ভিতোঁ না, অন্যান্য ফ্যাশন ব্র্যান্ডও এক্ষেত্রে কোনে অংশে কম যান না।
২০১৪ সালে ডিজাইনার আশীষ গুপ্তা প্লাস্টিকের বাজারের ব্যাগকে প্রিমিয়াম মূল্যে সিকুইনড স্টেটমেন্ট পিসে রূপান্তরিত করেন।
তার দাবি ছিল, এটি 'দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার্য জিনিসের প্রতি শ্রদ্ধা' প্রকাশ করার উদ্দেশে ডিজাইন করা।
২০১৭ সালে সিএনএনকে দেওয়া এক ই-মেইলে গুপ্তা বলেন, 'এটি ফাস্ট ফ্যাশন ট্রেন্ডের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহ।'
তবে ইউনিক ডিজাইন যে সবসময়ই সমাদৃত হয়, তা কিন্তু না। মাঝে মাঝে এসব কাজ বিতর্কেরও জন্ম দেয় এবং হাসির খোরাক হয়।
যেমন: ২০১৭ সালে আরেক বিখ্যাত ফ্যাশন ব্র্যান্ড ব্যালেনসিয়াগা ২ হাজার ১৪৫ ডলারের একটি ব্যাগ প্রকাশ করে। যা আইকিয়ার আইকনিক ৯৯ সেন্ট ক্রিঙ্কলি, নীল 'ফ্র্যাকটা' ব্যাগের মতো দেখতে ছিল।
তাদের এই ব্যাগের ছবি রাতারাতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এবং ব্যাপক ট্রলের শিকার হয়।