হলফনামায় মির্জা ফখরুলের পেশা ব্যবসা; বাৎসরিক আয় ১২ লাখ
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর প্রার্থী ও দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দাখিল করা হলফনামায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার পেশা ব্যবসা হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং বার্ষিক আয় ১২ লাখ টাকার বেশি বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তার হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা যায়।
হলফনামা অনুযায়ী, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মোট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদেরমূল্য ১ কোটি ৫২ লাখ ৭৮ হাজার ৮৮৩ টাকা। যদিও এর বাইরে তিনি ব্যক্তিগত একটি প্রাইভেট কার, ১০ ভরি স্বর্ণ ও একটি দুইনলা বন্দুকের মালিক। কিন্তু এসব মূল্য তিনি হলফনামায় অপ্রদর্শিত বলে উল্লেখ করেছেন।
মির্জা ফখরুল হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তার নামে ১০ টি মামলা রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে ৬টি বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলা, দুটি দণ্ডবিধি ৫০০ ধারার মামলা। তবে এসব মামলার কার্যক্রম বর্তমানে স্থগিত।
এর আগে তিনি ৫০টি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি পেশা হিসেবে ব্যবসা, পরামর্শক, কৃষি আয়, ব্যাংক মুনাফা ও সম্মানী ভাতা উল্লেখ করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, কৃষি খাত থেকে বার্ষিক ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ব্যবসা (হুরমত আলী মার্কেটের শেয়ার) থেকে ১ লাখ ৯৭ হাজার ২৩২ টাকা, ইজাব গ্রুপের পরামর্শক হিসেবে বছরে ৬ লাখ, দি মির্জাস প্রাইভেট লিমিটেড থেকে সম্মানী বাবদ ১ লাখ ৯৮ হাজার এবং ব্যাংক মুনাফা থেকে ৭ হাজার ৯০১ টাকা বছরে আয় হয়।
মির্জা ফখরুল জানিয়েছেন, তার কাছে নগদ ১ কোটি ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ১১৬ টাকা রয়েছে।
অস্থাবর সম্পদ
বিএনপি মহাসচিবের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৫২ টাকা। দি মির্জা প্রাইভেট লিমিটেডে তার ১,৪২৮টি শেয়ার রয়েছে। এর প্রতিটির মূল্য ১০০ টাকা। ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক পণ্য এবং ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে তার। সবমিলিয়ে তিনি ১ কোটি ৩৩ লাখ ৭৩ হাজার ৬৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য দিয়েছেন।
এছাড়া, তিনি হলফনামায় একটি প্রাইভেট কার, ১০ ভরি স্বর্ণ ও একটি দুই নলা বন্দুক রয়েছে বলে জানিয়েছেন। তবে এগুলোর মূল্য অপ্রদর্শিত উল্লেখ করেছেন।
স্থাবর সম্পদ
স্থাবর সম্পত্তির হিসেবে মির্জা ফখরুল ৫ একর কৃষি জমি; যার মূল্য ৬০ হাজার টাকা, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া দোতলা বাড়ি, যার মূল্য ১০ লাখ টাকা, ৪ শতাংশ বাণিজ্যিক অকৃষি জমি, যার মূল্য ৫ লাখ টাকা এবং মার্কেটের শেয়ার থেকে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৮৪১ টাকা মূল্য উল্লেখ করেছেন।
তবে এগুলো অর্জনকালীন মূল্য। বর্তমান মূল্য তিনি অজানা উল্লেখ করেছেন।
মির্জা ফখরুল হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, ২০২৫-২৬ কর বছরে তিনি আয়কর রিটার্নে মোট সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ১ কোটি ৫২ লাখ ৭৮ হাজার ৮৮৩ টাকা। রিটার্নে তিনি বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ১১ লাখ ৮৩ হাজার ১৩৩ টাকা এবং ব্যয় দেখিয়েছেন ৮ লাখ ৭১ হাজার ১৮৫ টাকা। তিনি আয়কর দিয়েছেন ৭২ হাজার ৮৮৯ টাকা।
বিএনপির মহাসচিব ইসিকে জানিয়েছেন, তিনি নিজ আয় থেকে নির্বাচনি ব্যয় মেটাবেন। ব্যবসা, কৃষি আয়, পরামর্শক, সম্মানী ভাতা ও ব্যাংক মুনাফা থেকে তার আয় হবে। তিনি সম্ভাব্য অর্থের পরিমাণ হিসেবে ৫১ লাখ ১৬ হাজার ২০০ টাকা উল্লেখ করেছেন।
মির্জা ফখরুলের স্ত্রীর সম্পদ
বিএনপি মহাসচিবের স্ত্রীর তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে ১১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৪ টাকা। আর তার স্ত্রীর কাছে নগদ রয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৩০ টাকা। সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৩৪ লাখ ২৮ হাজার ৯৩৫ টাকা। মেয়াদি আমানত রয়েছে ৪৫ লাখ ১১ হাজার ৭৫০ টাকার।
বিএনপির মহাসচিবের স্ত্রীর নামে একটি প্রাইভেট কার রয়েছে, যার দাম ২৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
এছাড়া এক লাখ টাকার ইলেকট্রনিক্স পণ্য ও এক লাখ টাকার আসবাবপত্র রয়েছে তার। রয়েছে ২০ ভরি স্বর্ণ, যদিও স্বর্ণের মূল্য অপ্রদর্শিত উল্লেখ করেছেন তিনি।
রাহাত আরা বেগমের নামে ২.৮৪ একর কৃষি জমি রয়েছে, যার মূল্য ৫১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। আর ঠাকুরগাওয়ে ১২ শতক অকৃষি জমি রয়েছে, যার মূল্য ৩৯ লাখ ৭২ হাজার টাকা, ঢাকার পূর্বাচলে রয়েছে ৫ কাঠা জমির একটি প্লট, যার দাম ৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকা।
এছাড়া গুলশান ২ এর ৭১ নং সড়কের ১৮ নম্বর বাড়িতে রয়েছে ১৯৫০ বর্গফুটের একটি ফ্লাট, যার দাম ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রী ২০২৫-২৬ কর বছরের আয়কর রিটার্নে মোট ২ কোটি ৪৩ লাখ ৯২ হাজার ৬৯৯ টাকার সম্পদ উল্লেখ করেছেন। তিনি বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ১২ লাখ ৫০ হাজার ৪৯৩ টাকা, আয়কর পরিশোধ করেছেন ১ লাখ ২০ হাজার ৫৮৫ টাকা।
