গবেষণাভিত্তিক নীতি না হলে তামাক নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতি থমকাবে: হোসেন জিল্লুর রহমান
তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর অগ্রগতি আনতে হলে নীতিনির্ধারণে গবেষণা ও তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্তের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান।
তিনি বলেন, 'ভুল তথ্য, অযৌক্তিক চাপ এবং শিল্পের হস্তক্ষেপ নীতিনির্ধারণকে দুর্বল করে দিচ্ছে, যার ফলে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।'
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সিরডাপ মিলনায়তনে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) আয়োজিত 'তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ সূচক, বাংলাদেশ ২০২৫'- গবেষণার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
গবেষণার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, 'তামাকজনিত কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর স্বাস্থ্য ও পরিবেশ খাতে প্রায় ৮৭ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। এই ক্ষতি শুধু স্বাস্থ্যখাতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং পরিবেশগত বিপর্যয়ের সঙ্গেও সরাসরি যুক্ত।'
তিনি আরও বলেন, 'একটি স্বাস্থ্যসম্মত সমাজ গড়ে তুলতে হলে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে তামাক ও তামাকজনিত আসক্তি থেকে মুক্ত রাখা জরুরি। তামাক অনেক ক্ষেত্রে অন্যান্য ক্ষতিকর আসক্তির সূচনা বিন্দু হিসেবে কাজ করে, যা সমাজের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি তৈরি করে।'
তামাক শিল্পের 'ইন্ডাস্ট্রি ইন্টারফেয়ারেন্স' প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'শিল্পখাত তাদের যুক্তিসঙ্গত দাবি তুলতেই পারে, তবে বিভ্রান্তিকর তথ্য ও অযৌক্তিক চাপ প্রয়োগ করে নীতি সুবিধা আদায়ের চেষ্টা গ্রহণযোগ্য নয়। নীতিনির্ধারণে এ ধরনের হস্তক্ষেপ জনস্বার্থের পরিপন্থী।'
সাম্প্রতিক সময়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাস হওয়াকে ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, 'যদিও সব দাবি এক দফায় পূরণ হয়নি, তবু এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম ধাপ। এখন দ্রুত গেজেট প্রকাশ করে আইনটির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা প্রয়োজন।'
তিনি আরও বলেন, 'নীতিনির্ধারণের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে পিছু হটার সুযোগ নেই। নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমকে সজাগ থেকে এই প্রক্রিয়ার ওপর নজরদারি চালিয়ে যেতে হবে।'
