ঢাকা-১৫ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিলেন জামায়াত আমির শফিকুর রহমান
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে ঢাকা-১৫ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে ঢাকা-১৩ ও ১৫ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলীর কাছে এই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়।
জামায়াত আমির সশরীরে উপস্থিত না থাকলেও তার পক্ষ থেকে দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) জামায়াত আমিরের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছিল। রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী বর্তমানে ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, 'আজকে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনে আমরা আমিরের পক্ষ থেকে উনার মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছি। আমরা প্রত্যাশা করছি, একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যাতে দেশবাসীকে উপহার দেওয়া যায়।'
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্ট কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা সবাই মিলে যাতে একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে পারি, সেই প্রত্যাশা করছি। নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের আরও কাজ করার আছে। আমরা আশা করছি কমিশন এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে।'
শরিক দলগুলোর মধ্যে কে কতটি আসন পেয়েছে এবং ৩০০ আসনের প্রার্থী তালিকা কখন জানা যাবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াত নেতা বলেন, 'তিনশো আসনে প্রার্থী আমরা প্রায় নিশ্চিত করতে পেরেছি। আজ সোমবার রাতের মধ্যেই তা জানিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।'
নির্বাচনী জোট বা সমঝোতার কৌশল স্পষ্ট করে তিনি উল্লেখ করেন, 'আমাদের এই আসন সমঝোতা কোনো গতানুগতিক জোটবদ্ধ নির্বাচন না। কিন্তু এটি অন্য যেকোনো জোটের চেয়েও শক্তিশালী হবে ইনশাল্লাহ। এখানে প্রত্যেকে নিজস্ব প্রতীক নিয়ে আমরা ইলেকশন করব। কৌশল হলো একটি আসনে আমাদের সমঝোতার মধ্যে থাকা একটি দলই থাকবে, বাকিরা তাকে সমর্থন জানাবে।'
এ সময় উপস্থিত জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম জানান, আরেকটি রাজনৈতিক দল তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। তবে দলটির নাম পরে জানানো হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে ঢাকা-১৫ আসন থেকে আরও বেশ কয়েকটি দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন বিএনপির মো. শফিকুল ইসলাম খান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আলমগীর ফেরদৌস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এস এম ফজলুল হক, গণফোরামের এ কে এম শফিকুল ইসলাম এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ডা. আহাম্মদ সাজেদুল হক রুবেল।
ঢাকা-১৩ ও ১৫ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী জানান, এখন পর্যন্ত এই দুটি আসনে মোট ৩৩ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের সংশোধিত তফসিল অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় আজ ২৯ ডিসেম্বর। এরপর ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা যাবে ৫ জানুয়ারি থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি হবে ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ জানুয়ারি। রিটার্নিং কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে প্রতীক বরাদ্দ করবেন ২১ জানুয়ারি। এরপর ২২ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে নির্বাচনী প্রচারণা, যা চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। আর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি।
