১৭ বছর পর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান, ব্যস্ত সূচিসহ এদিনে আর যেসব ব্যবস্থা থাকছে
দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে আগামী বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশের পাশাপাশি সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তার আগামী কয়েকদিনের ব্যস্ত সূচিতে ব্যক্তিগত কর্মসূচি ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
দলীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, তারেক রহমানকে বহনকারী ফ্লাইটটি বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। তার আগমনকে ঘিরে অবতরণের পরপরই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা ও প্রটোকল ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা হবে। তার সঙ্গে একই ফ্লাইটে দেশে ফিরছেন সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমান ও কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান।
প্রত্যাবর্তনের কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পর্কে দলের সূত্র জানিয়েছে, তারেক রহমানের প্রথম ও প্রধান অগ্রাধিকার হলো সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থ মা, খালেদা জিয়াকে দেখতে যাওয়া। তবে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে যাত্রাপথের মাঝামাঝি রাজধানীর 'জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে' (৩০০ ফিট) এলাকায় তিনি অতি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য দেশবাসীর উদ্দেশে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন। সেখান থেকে হাসপাতাল এবং তারপর সরাসরি গুলশানে নিজ বাসায় যাবেন।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এটি কোনো জনসভা বা সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নয়, শুধুমাত্র দেশবাসীর প্রতি তার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং খালেদা জিয়াসহ দেশের সকল মানুষের কল্যাণ কামনায় দোয়ার অনুরোধের একটি সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি। এই আয়োজনে তারেক রহমানই একমাত্র বক্তা।
সাধারণ মানুষের সেবা ও জরুরি চিকিৎসার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জনদুর্ভোগ কমাতে ঢাকাজুড়ে ২০টি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হচ্ছে, যেখানে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক, প্যারামেডিক, ওষুধপত্র ও অ্যাম্বুলেন্স থাকবে। সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পগুলোর তালিকা জনসাধারণের সুবিধার্থে প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া বক্তব্যস্থলের কাছাকাছি ৬ শয্যার একটি অস্থায়ী ফিল্ড হাসপাতাল থাকবে, যার সঙ্গে আইসিইউ সুবিধাসম্পন্ন অ্যাম্বুলেন্স সংযুক্ত থাকবে। পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ, সর্বত্র মোবাইল টয়লেট স্থাপন করা হবে।
যানজট এড়াতে রাজধানীতে প্রবেশের প্রধান পয়েন্টগুলোতে আলাদা বাস পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানানো হয় দলের পক্ষ থেকে। বিমানবন্দরগামী ও বিদেশফেরত যাত্রীদের পাশাপাশি রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে কাকলী মোড়, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে এবং আব্দুল্লাহপুরে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হবে। এসব ডেস্ক থেকে মোটরবাইক এসকর্টের মাধ্যমে জরুরি যান চলাচল নির্বিঘ্ন রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে বলে জানা যায়।
দলের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, সফরের দ্বিতীয় দিন আগামী শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জুম্মার নামাজ শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন তারেক রহমান। সেখানে মরহুম পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
সফরের তৃতীয় দিন অর্থাৎ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) তারেক রহমান চলতি মাসের শুরুতে গুলিতে নিহত 'ইনকিলাব মঞ্চ'-এর নেতা শরিফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করবেন। এরপর তিনি সশরীরে নির্বাচন কমিশনে উপস্থিত হয়ে নিজের ভোটার নিবন্ধনের আবেদন জমা দেবেন।
একই দিন বিকেলে তার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) যাওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেবেন বলে জানা যায়।
