২৫ মার্চের ক্র্যাকডাউন ছিল মুজিব বাহিনীর গণহত্যার প্রতিক্রিয়া: চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত আমির
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চালানো 'অপারেশন সার্চলাইট' বা ক্র্যাকডাউনকে 'মুজিব বাহিনী' কর্তৃক পরিচালিত গণহত্যার প্রতিক্রিয়া হিসেবে দাবি করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের যুব বিভাগ আয়োজিত এক র্যালি ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি করেন।
সমাবেশে মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, '১৯৭০ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমান সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পরও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করেছিল। কিন্তু সেই সময়ের সঠিক ইতিহাস আমাদের জানানো হয়নি। মূলত ২৫ মার্চের আগে মুজিব বাহিনী এলাকায় এলাকায় গণহত্যা চালিয়েছিল। আর এই গণহত্যার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ২৫ মার্চে ক্র্যাকডাউন শুরু করে।'
তিনি ইতিহাসের এই অংশটিকে 'কালো অধ্যায়' হিসেবে অভিহিত করে বলেন, 'গত ৫৪ বছর ধরে দেশের মানুষকে প্রকৃত ইতিহাস জানতে দেওয়া হয়নি, বরং 'ভারতের শিখিয়ে দেওয়া গল্প' গেলানো হয়েছে।'
জামায়াতের এই নেতা ১৯৭০ সালের ৩০ মার্চ স্বাক্ষরিত লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, 'সেখানে পাকিস্তানের ঐক্য রক্ষা ও ইসলামের বিরোধিতা না করার ওয়াদা থাকলেও পরবর্তীতে তা রক্ষা করা হয়নি।'
শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকার সমালোচনা করে মহানগর জামায়াত আমির বলেন, '২৫ মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানের কাছে আত্মসমর্পণ করে শেখ মুজিবুর রহমান জেলখানায় আরামে দিন কাটিয়েছেন। সেই শূন্যতা পূরণে এগিয়ে এসেছিলেন শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।'
বিজয় দিবসের এই অনুষ্ঠানে তিনি মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভূমিকা এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি দাবি করেন, ৬ থেকে ১২ ডিসেম্বর ভারতীয় বাহিনী যুদ্ধের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং তাদের পরিকল্পনাতেই ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
এসময়, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে কেন আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত রাখা হয়েছিল, বর্তমান প্রজন্মকে সেই সত্য জানার আহ্বান জানান তিনি।
যুব বিভাগ চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি ও নগর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত র্যালিপূর্ব এই সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও নগর সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এ কে এম ফজলুল হক, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান এবং জামায়াত নেতা ডা. আবু নাছের।
