হাসিনা গুমের নির্দেশ দেননি, দেশে গুম হয়েছে কি না তাও জানতেন না: রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী
আওয়ামী লীগের বিগত শাসনামলে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাউকে গুম বা অপহরণের নির্দেশ দেননি বলে ট্রাইব্যুনালে দাবি করেছেন তার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। এমনকি দেশে কোনো মানুষ গুমের শিকার হয়েছে কি না, তা শেখ হাসিনা জানেন না বলেও দাবি করেছেন তিনি।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ র্যাবের টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই সেল) জোরপূর্বক গুম ও অপহরণের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে শুনানিকালে আইনজীবী আমির হোসেন এসব দাবি করেন।
এ মামলায় শেখ হাসিনা এবং সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
শুনানিতে আমির হোসেন বলেন, 'প্রসিকিউশনের বক্তব্য হলো তিনি (শেখ হাসিনা) নাকি সব অপরাধের মা, সব অপরাধের সূতিকাগার। তাদের কথা অনুযায়ী শেখ হাসিনার নির্দেশে সব গুম সংঘটিত হয়েছিল। কোনো কোনো গুমে তার সরাসরি নির্দেশনা ছিল। কিন্তু এসব অভিযোগের লিখিত কোনো কিছু দেখাতে পারেনি প্রসিকিউশন। কারণ আমার মক্কেল কোনো গুম বা অপহরণের নির্দেশ দেননি। দেশে কোনো গুম হয়েছে কি না, তিনি জানতেন না।'
এ সময় ট্রাইব্যুনাল প্রশ্ন রাখেন, 'চিফ এক্সিকিউটিভ হিসেবে তিনি দায় এড়াতে পারেন কি না?'
জবাবে আইনজীবী বলেন, 'একটা দেশে বহু অপরাধ বা ঘটনা ঘটে। সবকিছু তো তার নলেজে থাকবে না। এছাড়া, এসবের (গুম-নির্যাতন) কোনো ঘটনা ঘটেনি। সব প্রোপাগান্ডা। কেননা প্রসিকিউশন কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। অতএব, এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ থেকে তিনি অব্যাহতি পাবেন।'
এদিন শুনানির আগে এ মামলায় গ্রেপ্তার থাকা ১০ সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত অস্থায়ী কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ১০ সেনা কর্মকর্তা হলেন—র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
মামলায় পলাতক আসামিরা হলেন—ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও র্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।
