গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, প্রতিবেদনের কিছু অংশ প্রকাশেও বাধা: কমিশন প্রধান
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের দেওয়া একটি প্রস্তাবও এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি। এমনকি এসব সুপারিশের বিষয়ে সরকার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপও নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ। কমিশনের প্রতিবেদনের কিছু অংশ প্রকাশেও বাধা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে 'এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ' আয়োজিত 'বাংলাদেশ রিফর্ম ট্র্যাকার'-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
কামাল আহমেদ বলেন, 'আমরা ১০০টিরও বেশি সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, সরকারের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবও গ্রহণ বা বাস্তবায়ন করা হয়নি।'
গণমাধ্যম সংস্কারের পথে আমলাতান্ত্রিক বাধা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবকেই প্রধান অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করেন তিনি।
কমিশন প্রধান জানান, সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সহযোগিতা করার জন্য গেজেট বিজ্ঞপ্তি থাকা সত্ত্বেও সরকারি দপ্তরগুলো থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে কমিশনকে বারবার বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গোপনীয়তার অজুহাত দেখিয়ে কমিশনের প্রতিবেদনের কিছু অংশ প্রকাশে বাধা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে টেলিভিশন লাইসেন্স কীভাবে দেওয়া হয়েছিল, সে সংক্রান্ত তথ্যও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সাংবাদিক সুরক্ষা আইনের খসড়া প্রস্তুত করার পরও সরকার কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা ছাড়াই তা বাদ দিয়েছে উল্লেখ করে সরকারের সমালোচনা করেন কামাল আহমেদ।
তিনি বলেন, সরকার একটি স্থায়ী ও স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। এর পরিবর্তে বিদ্যমান প্রেস কাউন্সিলকে পুনর্গঠন করা হয়েছে, যাকে তিনি 'অকার্যকর' এবং 'সরকারের ওপর নির্ভরশীল' বলে অভিহিত করেন।
কামাল আহমেদ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচনের আগে সাংবাদিকরা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছেন। যেহেতু সুপারিশকৃত কোনো সংস্কারই বাস্তবায়ন করা হয়নি, তাই সাংবাদিকদের ওপর কোনো হামলা হলে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।
সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, সংস্কারের সুযোগ এখনো আছে, তবে তা দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।
