হাদি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, প্রতিযোগী; হাসপাতালে উত্তেজনা ছিল পরিকল্পিত: মির্জা আব্বাস
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদিকে নিজের সন্তানতূল উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, হাদি আমার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, প্রতিযোগী। একইসঙ্গে হাসপাতালে হাদিকে দেখতে যাওয়ার পর যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, সেটিকে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হিসেবে দাবি করেছেন তিনি।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রতিবাদে এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
গুলিবিদ্ধ স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, 'সে আমার সন্তানতূল্য। হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংবাদ পেয়ে আমি মানসিকভাবে আহত হয়েছি। এ আঘাত গণতন্ত্রের ওপর আঘাত। হাদি আমার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, প্রতিযোগী। সে রাজপথের সাহসী সৈনিক। তাকে আমি নির্বাচনী মাঠে আবারও সক্রিয় পাবো সেই প্রত্যাশা করি।'
হাসপাতালে স্লোগান ও হট্টগোলের বিষয়ে মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেন, 'দুপুর দুইটায় হাদি গুলিবিদ্ধ হলেন, তার আধাঘন্টা পরই একটি দল উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া শুরু করে। আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পেলাম সবই পরিকল্পিত। হাসপাতালে যারা উত্তেজনা করেছে, তারা হাদির সমর্থক নয়, তারা অন্য একটি বিশেষ দলের। তারা চেয়েছিল হাদির চিকিৎসা ব্যাহত হোক এবং সে মারা যাক।'
তিনি বলেন, 'আমি ঢাকার ছেলে। দীর্ঘ ৫০ বছর ঢাকায় রাজনীতি করি। আমি শান্ত ছিলাম। আমার নির্দেশনা পেলে কর্মীরা তোমাদের তুলোধুনো করত কিন্তু আমরা শান্ত না থাকলে হাদির চিকিৎসা ব্যাহত হতো।'
নাম উল্লেখ না করে একটি রাজনৈতিক দলের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, 'একটি দলের ষড়যন্ত্র আমরা ১৯৭১ ও ১৯৮৬ সালসহ অনেক দেখেছি। এদের মূল শক্তিই ষড়যন্ত্র। এরা স্থির রাষ্ট্র সহ্য করতে পারে না। তাই রাষ্ট্রকে সবসময়ই অস্থিতিশীল রাখতে চায়। হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাদের এক-দেড়শ লোক ফেসবুকে মব সৃষ্টির জন্য উস্কানি দিয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, '৭৭ সাল থেকে নির্বাচন করে আসছি। কারও সাথে মারামারি হয়নি। একসাথে প্রার্থীরা কোলাকুলি করেছি, খেয়েছি। মারামারি করে আওয়ামী লীগ। আর নির্বাচনসহ রাষ্ট্রকে অস্থির করে সেই বিতর্কিত রাজনৈতিক দল। আমরা চাই হাদির ওপর হামলাকারী গ্রেপ্তার হোক এবং বিশেষ দলের মুখোশ উন্মোচিত হোক।'
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এছাড়া বক্তব্য রাখেন যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্নাসহ অনেকে।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর ও ফকিরাপুল মোড় ঘুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
