খোদা না করুন, অনিবার্য পরিস্থিতি ছাড়া নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরে যাবে না বিএনপি: নজরুল ইসলাম খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, খোদা না করুন- অনিবার্য কোনো পরিস্থিতি ছাড়া আমরা এই (নির্বাচন) প্রক্রিয়ার বাইরে যেতে চাই না। আমরা চাই যথাসময়ে নির্বাচন হোক। তফসিল ঘোষণা করার যে সময় নির্ধারণ করা আছে তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।'
বৃহস্পতিবার (০৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে, এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় সিইসির সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে ওই প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং নির্বাচন কমিশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া।
বৈঠক শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভোটার হওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'এটা নিয়ে বিশেষ আলোচনা করার কিছু নেই। উনি বাংলাদেশের নাগরিক। ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে- নাম উঠানোর জন্য সময় পার হয়ে যায়নি। কমিশন চাইলে যখন চায় তখনই পারে। এ নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তা নেই।'
বৈঠকে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা এবং কোনো ভোটার যেন তার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে কমিশনকে একাধিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে এবার সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য দুটি ব্যালট পেপার থাকায় ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা করছে দলটি।
এ সমস্যা সমাধানে বিএনপির প্রস্তাবনা তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'বর্তমানে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটের সময়কে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত করা যায় কিনা, তা বিবেচনা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রতি বুথে ভোটারের সংখ্যা কমানো এবং মার্কিং প্লেসের সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যাতে ভোট দেওয়ার কাজটি দ্রুত সম্পন্ন হয়। এছাড়া প্রয়োজনে ব্যালট বাক্সের সংখ্যাও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।'
বিএনপির উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন কী জানিয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'তারা এ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন এবং আগামী রোববারের মিটিংয়ে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। কমিশনও চাইছে সব ভোটার যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে।'
এছাড়া ভোটার আইডি তৈরির ক্ষেত্রে ন্যাশনাল আইডি কার্ডের (এনআইডি) বিকল্প হিসেবে পাসপোর্টকে ভ্যালিড ডকুমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করার জন্য বৈঠকে জোরালো অনুরোধ জানিয়েছে বিএনপি।
এ বিষয়ে যুক্তি দেখিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'অনেক নাগরিকের, বিশেষ করে বিদেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশীদের ন্যাশনাল আইডি নেই, কিন্তু তাদের সবারই পাসপোর্ট আছে। ন্যাশনাল আইডি ও পাসপোর্ট উভয়ই সরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত ভ্যালিড ডকুমেন্ট। প্রবাসী বাংলাদেশীরা ভোট দিতে চাইলেও ন্যাশনাল আইডি না থাকায় পারছেন না। এজন্য পোস্টাল ব্যালটের রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রেও পাসপোর্টকে বিবেচনা করার অনুরোধ করা হয়েছে।'
আলোচনায় ব্যালট পেপার ছাপানোর ক্ষেত্রে কোনো বেসরকারি (প্রাইভেট) প্রেস ব্যবহার না করার বিষয়টিও উঠে আসে। বিএনপি মনে করে, ব্যালট প্রাইভেট প্রেসে ছাপা হলে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
এ বিষয়ে আশ্বস্ত হওয়ার কথা জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'নির্বাচন কমিশন আশ্বস্ত করেছে যে কোনো প্রাইভেট প্রেসে ব্যালট পেপার ছাপানো হবে না।'
