গণভোট অধ্যাদেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আবারো আরপিও সংশোধন করছে ইসি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ভোটিং যুক্ত হওয়ার পর গণভোট অধ্যাদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) নতুন করে সংশোধনী প্রস্তুত করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, "গণভোটের কারণে আরপিওতে আবার সংশোধনী আনতে হচ্ছে।"
তিনি জানান, আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত সংশোধনী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে। "লাস্ট মোমেন্ট পর্যন্ত এডজাস্ট করতে হচ্ছে। আচরণবিধিতেও ভাষাগত সংশোধন আসছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া।"
ইসি কর্মকর্তারা জানান, আরপিও সংশোধনীতে পোস্টাল ব্যালটে ভোটগ্রহণ ও গণনা–সংক্রান্ত অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব রয়েছে। পোস্টাল ভোট গণনার শেষ সময়ও এতে স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের অনুচ্ছেদ ২৭-এ প্রস্তাবিত সংশোধনীতে উল্লেখ আছে—পোস্টাল ব্যালটে কোনো প্রতীকের বিপরীতে ক্রস বা টিক চিহ্ন না থাকলে তা গণনায় ধরবে না। কোনো আসনে আদালতের রায়ে প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন এলে সেই আসনের জমা থাকা পোস্টাল ব্যালটও গণনা করা হবে না। পোস্টাল ব্যালটের সঙ্গে থাকা ঘোষণাপত্রে ভোটারের স্বাক্ষর না থাকলে তা গণ্য হবে না।
এ ছাড়া বিধি ১৪(খ) সংশোধনে ইসির প্রস্তাব—সংসদীয় আসনের প্রতি ইউনিয়ন বা পৌরসভা বা মেট্রোপলিটন এলাকায় ওয়ার্ডপ্রতি একটি অথবা নির্বাচনি এলাকায় ২০টির মধ্যে (যেটি বেশি) বিলবোর্ড ব্যবহার করা যাবে। এটি পাশ হলে প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা ও মেট্রোপলিটন এলাকায় ওয়ার্ডপ্রতি একটি করে বিলবোর্ডে প্রচার চালানোর সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা।
ইসি জানিয়েছে, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা এবং ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
আইন–বিধি সংস্কারের কাজ সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে শেষ হয়। ৩ নভেম্বর আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি হয়। এর ভিত্তিতে ১০ নভেম্বর 'রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা ২০২৫' প্রকাশিত হয়। সর্বশেষ ২৫ নভেম্বর গণভোট অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। তবে তখন ইসিকে গণভোট আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি, ফলে আরপিওতে গণভোট সংযুক্ত ছিল না।
আরপিও সংশোধন ও আচরণবিধির অস্পষ্ট বিষয়-সংক্রান্ত প্রস্তাবনা গত সপ্তাহে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অধ্যাদেশ সংশোধনের জন্য উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন প্রয়োজন, আর আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের পর আচরণবিধির সংশোধন ইসি নিজেই করতে পারবে।
