ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিরূপ মন্তব্য: নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় আদালত অবমাননার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লিখিতভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফজলুর রহমান।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
গত রোববার (৩০ নভেম্বর) জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে বিএনপি নেতা ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফজলুর রহমানকে ৮ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
এ বিষয়ে শুনানিকালে ট্রাইব্যুনাল মন্তব্য করেন, ফজলুর রহমানের এ ধরনের বিরূপ মন্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধের শামিল।
এর আগে, গত ২৬ নভেম্বর চিফ প্রসিকিউটরের পক্ষে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই অভিযোগ দাখিল করেন। ওই দিন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ) মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর আদালতে এ বিষয়ে আংশিক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগটিকে 'গুরুতর' বিবেচনা করে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য রোববার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছিল।
রোববার ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার শুনানির এক পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশনের উদ্দেশে বলেন, 'উনি (ফজলুর রহমান) অ্যাডভোকেট নাকি? ওকালতির সার্টিফিকেট আছে? কোর্ট-কাচারিতে আসছেন কোনোদিন? এলে এমন কথা কোনোদিনও বলতেন না।'
জবাবে প্রসিকিউটর বলেন, 'উনি সবসময় একটু বাড়িয়ে বলেন। উনি নাকি ৪৪ বছর ধরে আইন পেশায় রয়েছেন। কিন্তু আমরা ঘেঁটে দেখেছি তিনি ১৯৯২ সাল থেকে কাজ করছেন। সে হিসাবে ৩৩ বছর।'
একপর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, 'আইনের সমালোচনা করা যাবে। রায়ের সমালোচনা করা যাবে। বিচারকেরও সমালোচনা করা যাবে। কিন্তু রায় মানি না, এটা বলা শুধু আদালত অবমাননাই নয়, রাষ্ট্রদ্রোহিতাও।'
প্রসিকিউশন জানায়, গত ২৩ নভেম্বর বেসরকারি টেলিভিশন 'চ্যানেল ২৪'-এর 'মুক্তবাক' টকশোতে অতিথি হিসেবে অংশ নেন অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। সেখানে তিনি ট্রাইব্যুনালের গঠন ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং বিরূপ মন্তব্য করেন। একপর্যায়ে তিনি বলেন, 'আমি এ বিচার মানি না'। প্রসিকিউশনের দাবি, তার এমন বক্তব্য সরাসরি আদালত অবমাননার শামিল।
উল্লেখ্য, অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান আগামী জাতীয় নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তবে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গত ২৬ আগস্ট তার প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব ধরনের দলীয় পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করে বিএনপি।
