স্থিতিশীলতার স্বার্থে জাতীয় নির্বাচনের দিনে গণভোটে রাজি জামায়াতসহ ৮ দল
দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থে এবং প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে সম্মান জানিয়ে জাতীয় নির্বাচনের দিনেই গণভোটে অংশ নিতে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা ৮টি রাজনৈতিক দল। যদিও দলগুলো প্রথমে গণভোট ও নির্বাচন পৃথকভাবে আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছিল।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে ৮ দলের ডাকা বিভাগীয় সমাবেশস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম।
মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, 'জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সরকারের জারি করা আদেশকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য গণভোট অপরিহার্য। ৮ দল গণভোট একই দিনে না করে পৃথকভাবে এবং নভেম্বর মাসে আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছিল। কারণ, একই দিনে গণভোট হলে কিছু আশঙ্কা ও মিশ্র পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে তাই আমরা আলাদা আয়োজন চেয়েছিলাম।'
তিনি আরও বলেন, 'তবে দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থে এবং প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে সম্মান জানিয়ে আমরা একই দিনে গণভোটে অংশ নিতে রাজি হয়েছি। একই দিনে হলেও জনগণ 'হ্যাঁ'-এর পক্ষেই রায় দেবে।' রংপুরে বিভাগীয় গণসমাবেশ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্যই জনগণকে 'হ্যাঁ' ভোটের পক্ষে সুদৃঢ়ভাবে দাঁড় করানো বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সমাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে মাওলানা হালিম বলেন, 'সমাবেশ বাস্তবায়নে রংপুরের ৮ দলের নেতৃবৃন্দ অত্যন্ত আন্তরিকতা ও মনোযোগ দিয়ে কাজ করছেন। লাখো মানুষের অংশগ্রহণে এই সমাবেশ জাতির সামনে একটি নতুন নজির স্থাপন করবে।'
গণভোট ও নির্বাচন প্রসঙ্গের পাশাপাশি তিনি জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক ভূমিকারও কঠোর সমালোচনা করেন। মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, 'জাতীয় পার্টির তোষামোদী ভূমিকার কারণেই শেখ হাসিনার ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠা পায়। জাতীয় পার্টির বড় চমক হলো তারা আওয়ামী লীগকে তুষ্ট করতে করতে ভারতের আজ্ঞাবাহী শেখ হাসিনাকে ১৫ বছর ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের অগণতান্ত্রিক নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট ব্যাহত হওয়ার পেছনে অন্যতম দায় তাদের।'
তিনি আরও বলেন, 'একসময় রংপুরসহ দেশের মানুষের সহানুভূতি ছিল জাতীয় পার্টির প্রতি কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনার অন্ধভক্তির মাধ্যমে জনগণের আস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে দলটি।' আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করাও এখন সাধারণ মানুষের গণদাবিতে পরিণত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
পরিদর্শনকালে আব্দুল হালিমের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর রংপুর মহানগর আমির ও রংপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী উপাধ্যক্ষ এটিএম আযম খান, সেক্রেটারি কে এম আনোয়ারুল হক কাজল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রংপুর মহানগর সভাপতি মুফতি আব্দুর রহমান কাসেমী, সাধারণ সম্পাদক ও রংপুর-৩ আসনের প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়াল, রংপুর-১ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক রায়হান সিরাজীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
