হাসিনা, রেহানা, টিউলিপকে দেশে ফেরাতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক
শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও টিউলিপ সিদ্দিককে দেশে ফেরাতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের (দুর্নীতি দদম কমিশন) আইনজীবী খান মো. মঈনুল হাসান।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলার রায় ঘোষণার পর তিনি বলেন, "যে আসামিরা যেসব দেশে আছেন, তাদের ফেরাতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবো।"
"টিউলিপ একদিকে বাংলাদেশি নাগরিক, অন্যদিকে ব্রিটিশ নাগরিক। তাকে দেশে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়া হবে। বাংলাদেশের আইনে যে প্রক্রিয়া রয়েছে, আমরা তা সম্পন্ন করবো সরকারকে সঙ্গে নিয়ে," বলেন তিনি।
এ বিষয়ে দুদক আইনজীবী আরও বলেন, "আমরা দুদকের সঙ্গে আলোচনা করে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবো। রায় আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি—যাবজ্জীবন—চেয়েছিলাম।"
এদিকে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় আজ (১ ডিসেম্বর) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৫ বছর, তার বোন শেখ রেহানা সিদ্দিককে ৭ বছর এবং ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিককে ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তিনজনকেই ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। একই মামলার অপর ১৪ আসামিকেও পাঁচ বছরের করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, পবিত্র কোরআনে আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে বলেছেন—পাপ ও জুলুমের বিষয়ে একে অপরকে সহায়তা করো না। দুর্নীতি এখন এক ধরনের রোগে পরিণত হয়েছে এবং সমাজকে গ্রাস করছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এই মামলায় একমাত্র আসামি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ছাড়া বাকি ১৬ জনই পলাতক। তাদের কেউই আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ পাননি। কেন তা হয়নি—রায়ের পর্যবেক্ষণে ব্যাখ্যা দেন বিচারক।
তিনি বলেন, "বাংলাদেশের নাগরিক যেখানে থাকুক, আইন অনুযায়ী তাকে বিচার করার কোনো বাধা নেই। কেবল মৃত্যুদণ্ডযোগ্য ধারার ক্ষেত্রে পলাতক আসামির জন্য ডিফেন্স ল'ইয়ার নিয়োগের বিধান রয়েছে। এই মামলায় এমন কোনো ধারা না থাকায় ডিফেন্স ল'ইয়ার নিয়োগের সুযোগ নেই। উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী, ফৌজদারি মামলায় শুনানির অধিকার দাবি করার আগে আসামিকে আত্মসমর্পণ করতে হয়। আত্মসমর্পণ ছাড়া বিচারিক সুবিধা পাওয়া যায় না।"
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন—গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, একই মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, রাজউকের সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
