নির্বাচনের প্রস্তুতি: মাঠ প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় জোরদার করছে ইসি
আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ জানান, বড় পরিসরের এ নির্বাচনের প্রস্তুতিতে মাঠ প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা হচ্ছে।
রোববার (৩০ নভেম্বর) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা ও প্রাক-প্রস্তুতিমূলক বিষয় নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
ভোটের কারিগরি দিক তুলে ধরে ইসি সচিব বলেন, 'একটি ভোটকক্ষে দুটি গোপন কক্ষ (স্ট্যাম্পিং বুথ) রাখার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে ভোট দেওয়ার সময় কমে এবং ভোটারদের প্রবাহ বজায় থাকে। মক ভোটিংয়ের প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে- ভোটকেন্দ্র বাড়ানোর প্রয়োজন নাও হতে পারে, তবে প্রতিটি বুথে গোপন কক্ষ বাড়ানো লাগতে পারে।'
এর আগে রোববার বেলা ৩টায় ইসি ভবনে এ সভা শুরু হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভিন্ন বিভাগ ও কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় শান্তিশৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্য ব্যবস্থাপনা, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত এবং আগাম পোস্টার-ব্যানার অপসারণসহ অন্তত ২২টি ইস্যু নিয়ে সচিবদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন আলোচনা করে।
ব্রিফিংয়ে প্রবাসী ভোটারদের প্রসঙ্গে সচিব জানান, তাদের জন্য বন্ধ থাকা নিবন্ধন প্রক্রিয়া পুনরায় চালু হয়েছে এবং তথ্য সংশোধনের জন্য 'এডিট মোড' যুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অ্যাপ ডাউনলোড করেছেন ২ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ এবং নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ১ লাখ। এ সময় তিনি আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রবাসীদের নিবন্ধন করতে উদ্বুদ্ধ করতে গণমাধ্যমকে অনুরোধ জানান।
নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নৈতিকতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, 'ভোটের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আতিথ্য গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা কঠোর করা হবে। এ কারণে তাদের ভাতা ও আর্থিক সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে।'
নির্বাচনী সামগ্রী ও ব্যালট পেপার প্রসঙ্গে তিনি জানান, ব্যালট পেপার প্রিন্টিং- দেশে সরকারি প্রেসে এবং প্রবাসী ভোটের ব্যালট সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা প্রেসে সম্পন্ন হচ্ছে। এছাড়া ডাক বিভাগকে তেজগাঁও ও বিমানবন্দর সর্টিং সেন্টার পরিদর্শনের ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ভোটারদের সুবিধার্থে স্থানীয়ভাবে উপযোগী ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। একইসঙ্গে গণভোট, আউট-অফ-কান্ট্রি ভোটিং, এআই'এর অপব্যবহার প্রতিরোধ ও ভোটার শিক্ষা- এসব বিষয়ে প্রচারণা জোরদার করার কথা জানানো হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে মাইকিং, স্থানীয় প্রচারণা ও টিভি কাভারেজ বাড়ানোর জন্যও অনুরোধ করেছেন সচিব।
তিনি আরও জানান, চূড়ান্ত সময়-পর্যালোচনা ও ভোটের তারিখ ঘোষণার পরই মূল কাজ বেগবান হবে। নতুন কোনো চ্যালেঞ্জ এলে তা পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে।
