ছয় বছর পর ১০০ কোটি টাকার ড্রেজিং পাইপ নিলামে তুলছে চট্টগ্রাম কাস্টমস
দীর্ঘ ছয় বছর আটকে থাকার পর চট্টগ্রাম কাস্টমসের অকশন শেডে পড়ে থাকা প্রায় ১০০ কোটি টাকা মূল্যের ২ হাজার ৭৮৩ টন ড্রেজিং পাইপ ও অন্যান্য সরঞ্জাম দুই লটে বিশেষ নিলামে তুলেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তবে এসব পণ্য বিক্রি করার জন্য কাস্টমস কোনো ধরনের সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ করেনি।
গত ২০ নভেম্বর থেকে বিডারদের (নিলামে অংশগ্রহণকারী) কাছ থেকে অনলাইনে প্রস্তাবিত দরপত্র গ্রহণ শুরু হয়েছে, যা চলবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর বিকাল ৪টা পর্যন্ত। আগ্রহী বিডাররা পণ্য পরিদর্শন করতে পারবেন ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
ঢাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চেঞ্জিং ড্রেজিং প্রাইভেট লিমিটেড ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর এই চালানটি আমদানি করেছিল। চালানের মধ্যে রয়েছে ২০ ও ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের ১ হাজার ৯০০টি পাইপ ও ৮ কনটেইনারভর্তি পাইপ ফিটিংস ও যন্ত্রপাতি। আমদানিকৃত পাইপগুলো নতুনের পরিবর্তে ব্যবহৃত হওয়ায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তখন পণ্য খালাস স্থগিত করে দেয়।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন ওজনের এই পাইপগুলোর ঘোষিত আমদানিমূল্য ছিল ৮০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অন্যদিকে ৮৩ মেট্রিক টন ওজনের ফিটিংস ও যন্ত্রপাতির মূল্য ধরা হয়েছিল ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এই চালানটি চীন থেকে তৈরি হয়ে সিঙ্গাপুর হয়ে বাংলাদেশে এসেছিল, কিন্তু আমদানিকারক শেষপর্যন্ত পণ্যগুলো খালাস করেননি।
২০২০ সালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ পণ্যগুলো কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি সনদ (এনওসি) না পাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে নিলাম প্রক্রিয়া আটকে ছিল। অবশেষে গত ১০ নভেম্বর মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় এনওসি ইস্যু করে।
মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই অনাপত্তিপত্রে সরকারের রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে এসব পণ্য দুই লটে নিলামের মাধ্যমে নিষ্পত্তির অনুমোদন দেওয়া হয়। অনাপত্তিপত্রে আমদানি নীতি মেনে চলা, প্রযোজ্য শুল্ক-কর পরিশোধ ও পণ্যগুলো ব্যবহারযোগ্য কি না, তা নিশ্চিত করার শর্ত দেওয়া হয়েছে। এ অনুমোদন কেবল নির্দিষ্ট এই চালানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
চট্টগ্রাম কাস্টমস নিলামকারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াকুব চৌধুরী টিবিএসকে বলেন, পণ্যগুলো দীর্ঘ দিন ধরে অকশন শেডের বাইরে পড়ে ছিল। পাইপগুলো পরিবহন করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে, কারণ প্রতিটি পাইপের ওজন তিন থেকে সাড়ে তিন টনের মতো।
তিনি আরও বলেন, 'একটি ট্রলিতে তিনটির বেশি পাইপ উঠানো যাবে না। চট্টগ্রামের বাইরের বিডারদের জন্য অনেক ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। ফলে এটি স্ক্র্যাপ হিসেবেও দর উঠতে পারে। তবে ড্রেজারের জন্য এসব মালামালের দর করলে দাম উঠতে পারে।'
চট্টগ্রাম কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার এইচএম কবির বলেন, 'বিশেষ নিলামে দুই লট ড্রেজিং পাইপ ও সরঞ্জাম তোলা হয়েছে। আগ্রহী বিডারদের কাছে অনলাইনে প্রস্তাবিত দর মূল্য নেয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার জট নিরসনে এটি ভূমিকা রাখবে।'
