প্রশাসনের পেশাদারিত্ব নিয়ে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য: জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীকে শোকজ
প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব নিয়ে 'বিতর্কিত' মন্তব্য করার জেরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে দলটি। তার মন্তব্য দলের ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ন করেছে এবং দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী, এমন অভিযোগ করা হয়েছে নোটিশে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের সই করা নোটিশে এ অভিযোগ আনা হয়। শাহজাহান চৌধুরীকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২২ নভেম্বর (শনিবার) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত 'নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলনে' বক্তব্য দেওয়ার সময় শাহজাহান চৌধুরী প্রশাসন নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন।
সে সময় শাহজাহান চৌধুরী বলেন, 'নির্বাচন শুধু জনগণ দিয়ে নয়, যার যার নির্বাচনী এলাকায় প্রশাসনের যারা আছে, তাদের সবাইকে আমাদের আন্ডারে (অধীনে) নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেপ্তার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে।'
দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শাহজাহান চৌধুরীর এই বক্তব্য রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের পেশাদারিত্ব, নিরপেক্ষতা ও মূল স্পিরিটকে স্পষ্টভাবে ব্যাহত করেছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর এবং দেশের কূটনৈতিক মহল থেকেও এই বক্তব্যের পর তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। একই সাথে, দেশ-বিদেশে জামায়াতের জনশক্তি এবং সাধারণ জনগণের মাঝেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এতে বলা হয়, "এই বক্তব্যের কারণে ইতোমধ্যে সংগঠনের ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা দলীয় গঠনতন্ত্র, নীতি, আদর্শ, শৃখলা ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক আচরণের পরিপন্থী।"
বারবার সতর্ক করার পরও পরিবর্তন নেই
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, শাহজাহান চৌধুরী এর আগেও বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের 'সাংগঠনিক ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্নকারী ও শৃঙ্খলাবিরোধী' বক্তব্য দিয়েছেন। এ কারণে তাকে কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে এবং পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমনকি জামায়াদের আমিরও তাকে ডেকে দৃষ্টি আকর্ষণ ও সতর্ক করেছিলেন।
তা সত্ত্বেও তার মধ্যে কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। জামায়াত আমিরের নির্দেশে শাহজাহান চৌধুরীকে নোটিশ দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন তার ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না ।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়া গেলে দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও নোটিশে সতর্ক করা হয়েছে।
