ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ফ্রান্সের সহযোগিতা চাইলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ফ্রান্সের সহযোগিতা চেয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
আজ (২৪ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান।
বৈঠকে দু'দেশের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধি, ভূমিকম্প সম্পর্কে সচেতনতা ও করণীয়, জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা ঝুঁকি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপতথ্য ও গুজব প্রতিরোধ, ডিপ্লোমেটিক জোনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, অগ্নি দুর্ঘটনার তদন্ত সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, 'বাংলাদেশ ও ফ্রান্স ঘনিষ্ঠ বন্ধুপ্রতিম দেশ। অদূর ভবিষ্যতে বিদ্যমান এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।'
রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি সংঘটিত ভূমিকম্প সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, 'বর্তমান সরকার ভূমিকম্প সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ, উন্মুক্ত স্থান বৃদ্ধি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহ ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। উন্নত মানের ফায়ার সরঞ্জাম ও ভূমিকম্পে উদ্ধার তৎপরতার আধুনিক ইকুইপমেন্ট সরবরাহসহ এ খাতে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল তৈরিতে ফ্রান্সের সহযোগিতা প্রয়োজন।'
তিনি এসময় বিভিন্ন অগ্নিদুর্ঘটনার তদন্ত সক্ষমতা বৃদ্ধিতেও দেশটির কারিগরি সহযোগিতা কামনা করেন।
রাষ্ট্রদূত এ খাতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠানোর অনুরোধ করেন।
রাষ্ট্রদূত জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্বাচন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।'
নির্বাচনে নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।'
নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে বলে রাষ্ট্রদূত এসময় উপদেষ্টাকে জানান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপতথ্য ও গুজব ছড়ানো সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, 'ফ্যাসিস্টের দোসররা দেশে-বিদেশে গুজব ও অপতথ্য ছড়াচ্ছে। গুজব প্রতিরোধে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে কাজ করছে।'
রাষ্ট্রদূত বলেন, 'সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো সহজ, কিন্ত এটাকে থামানো কঠিন।'
ফ্রান্স দূতাবাসে নিরাপত্তা বৃদ্ধির বিষয়ে রাষ্ট্রদূত উপদেষ্টাকে অনুরোধ করলে তিনি বলেন, 'আমরা ডিপ্লোমেটিক জোনে সামগ্রিকভাবে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছি। এক্ষেত্রে সব দূতাবাসকে সমানভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।'
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক-১ অধিশাখার যুগ্মসচিব মু. জসীম উদ্দিন খান, ফ্রান্স দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ফ্রেডেরিক ইনজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
