নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ায় আদালতের অসন্তোষ
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়ার চলমান প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে জারি করা রুলের শুনানিতে দেশের নিরাপত্তা প্রশ্ন জড়িত বলে উল্লেখ করেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম।
তিনি আদালতকে বলেন, 'নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণেই বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, এমনকি সেনাপ্রধানও এ বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।'
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সংক্রান্ত শুনানিতে আইনজীবী আহসানুল করিম আরও বলেন, 'এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশিদের দিলে রেভিনিউ বাড়বে না বরং কমবে। কারণ রেভিনিউর বিরাট অংশ বিদেশে চলে যাবে।'
আদালত এ রুলের পরবর্তী শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দিন ধার্য করেছেন। একইসঙ্গে, অ্যাটর্নি জেনারেলের আশ্বাসের পরেও টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ওপর আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
এদিন আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এবং ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আদালতকে আশ্বস্ত করেছিলেন, রুল শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে হস্তান্তর করা হবে না।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ একটি রুল জারি করেন। রুলে এনসিটি পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এছাড়াও, যেকোনো অপারেটরকে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি মেনে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক টেন্ডার নিশ্চিত করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়।
'নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে' শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে গত ২৬ এপ্রিল প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য গণমাধ্যমের প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিটটি দায়ের করা হয়। বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন এ রিট আবেদন করেন, যেখানে নৌ-সচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে।
