বিএনপির নির্বাচনী প্রচারে জিয়া-তারেকের ছবি ব্যবহারে আপত্তি এনসিপির
নির্বাচনী প্রচারণায় দলীয় প্রধানের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছবি ব্যবহার করা হলে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসি আয়োজিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে দলটির নেতারা এই সুপারিশ করেন।
প্রার্থীরা দলের বর্তমান প্রধান ছাড়া অন্য কারও ছবি ব্যবহার করতে পারবেন না—এ বিষয়টি উল্লেখ করে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মূসা বলেন, 'ইসির সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন করছি। আপনাদের রিয়েল টেস্ট [আসল পরীক্ষা] হবে। বিএনপির প্রধান দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে বিএনপির প্রার্থীরা তারেক রহমান বা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছবি ব্যবহার করলে আচরণবিধি প্রয়োগ ব্যবহার করতে হবে।'
বিষয়টিকে নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি পরীক্ষা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আমরা সুনির্দিষ্টভাবে বলছি-প্রথম টেস্ট হবে। তারেক রহমানের ছবি বিএনপির প্রার্থী ব্যবহার করলে প্রথমেই তার ওপরে আচরণবিধি প্রয়োগ করে সক্ষমতা দেখাতে হবে। তারেক রহমান বা শহীদ জিয়াউর রহমানের ছবি ব্যবহার করলে কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন, তখন ইসির সক্ষমতা দেখতে পাব—এটা বাস্তবায়নর জন্য কতটুকু প্রতিজ্ঞবদ্ধ আছেন।'
সংলাপে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব বলেন, দেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে নির্বাচনী সংস্কৃতি এবং উৎসবের আমেজ জড়িয়ে আছে। কিন্তু যারা বিদ্যমান আচরণবিধিমালা প্রণয়ন করেছেন, তার সঙ্গে এই সংস্কৃতির কোনো সংযোগ নেই।
তিনি বলেন, 'নির্বাচনী আমেজ মানে পোস্টারিং, মাইকিং, জনসম্পৃক্ততা ও জনসভাকে বুঝি। এখানে এমন অন্যায্য বিধান প্রনয়ন করা হয়েছে, এটা বাস্তবতায়নের করার কোনো সক্ষমতা ইসির নেই।…এটা নিপীড়নমূলক আইন হবে যদি নির্দিষ্ট কারো বিরুদ্ধে করে, শক্তিশালী কারোর বিরুদ্ধে একই বিধান ব্যবহারের সক্ষমতাও আপনার নেই।'
বিধি লঙ্ঘনের শাস্তি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে বা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দিয়ে তা করানো হবে কি না—সে বিষয়টি স্পষ্ট নয় বলে জানান এনসিপির এই নেতা। তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার পর অভিযোগ পেলে তদন্ত করার জটিলতা এবং সময়ক্ষেপণ সামাল দেওয়ার মতো লোকবল বা সক্ষমতা ইসির নেই।
কমিশনের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা নিয়ে তিনি বলেন, 'কমিশনের প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে, কিন্তু কতদিনের মধ্যে কীভাবে করবে তা বলা নেই। ইসির কর্মকর্তা যদি নিরপেক্ষ না থাকে, কোনো প্রতিকারের বিষয় এখানে নেই। কর্মকর্তা কিছু করল না, এর মেকানিকজম [ব্যবস্থা] থাকা দরকার ছিল বিধিতে।"
বিদ্যমান আচরণবিধিকে সার্বিকভাবে 'অবাস্তব' ও নির্বাচনী ঐতিহ্যের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেন জহিরুল ইসলাম মূসা। তিনি বলেন, এটি পরিবেশবান্ধব হলেও দেশের অবকাঠামোগত সুবিধাকে অস্বীকার করেছে। পোস্টার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রার্থীরা এত অল্প সময়ে চটের ব্যাগে কাপড়ের প্রিন্ট দিয়ে কীভাবে প্রচারণা চালাবেন? এটা অমূলক।
উল্লেখ্য, নির্বাচনী আচরণবিধির ৭-এর (চ) দফায় বলা হয়েছে, দলীয় প্রার্থী কেবল তার বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবি ব্যানার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ও ফেস্টুনে ছাপাতে পারবেন। প্রচারণার পোট্রেট ছবি হতে হবে সাধারণ এবং নির্ধারিত মাপের (৬০ ও ৪৫ সেন্টিমিটার আয়তনের মধ্যে)।
