বিএনপি ১৯.৬%, জামায়াত ১৬.৯%; ভোটে এখনও সিদ্ধান্তহীন ৩০% তরুণ: বিওয়াইএলসি জরিপ
১৯.৬% তরুণ বিএনপিকে, ১৬.৯% জামায়াতে ইসলামীকে, ৯.৫% আওয়ামী লীগকে এবং ৩.৬% জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি)- সমর্থন করেন। এছাড়াও বাংলাদেশের ৩০ শতাংশ তরুণ এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তারা কাকে ভোট দেবেন। আবার ১৭.৭ শতাংশ তরুণ তাদের পছন্দের দলের নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক।
এমন তথ্য উঠে এসেছে বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার (বিওয়াইএলসি) পরিচালিত 'ইয়ুথ ম্যাটারস সার্ভে ২০২৫'-তে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) ঢাকার বিওয়াইএলসি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সার্ভের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, দেশের ৮ বিভাগে ২৭টি জেলাজুড়ে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ২ হাজার ৫৪৫ জন তরুণের সরাসরি সাক্ষাৎকার নিয়ে এই জরিপ পরিচালিত হয়।
তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো— ৮৯% তরুণ নিবন্ধিত ভোটার এবং ৯৭.২% ভোট দিতে আগ্রহী। তাদের মধ্যে ৪৯.৮% মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনি প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হবে।
এছাড়া ৬৩.১% উত্তরদাতা জানিয়েছেন, বর্তমান সময়ে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বা জনসমক্ষে নিজেদের মত প্রকাশে আগের চেয়ে বেশি নিরাপদ বোধ করেন।
জরিপে দেখা যায়, ৫২.৬% তরুণ মনে করেন ছাত্ররাজনীতি শিক্ষাঙ্গনের সুষ্ঠু পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাদের মধ্যে ৪৮% রাজনৈতিক প্রভাব, ২৩.৮% সহিংসতা ও সংঘর্ষ এবং ১১.১% ক্ষমতার অপব্যবহারকে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে, ৬৭.১% তরুণ দুর্নীতি নির্মূলকে দেশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছেন। ৬৫.৩% তরুণ মনে করেন ধর্মীয় ও জাতিগত সম্প্রীতি এখনও টিকে আছে, তবে ৭৬% তরুণ মনে করেন নারীরা দেশে নিরাপদ নন, যা লিঙ্গভিত্তিক অনিরাপত্তার উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে।
জরিপে অংশ নেওয়া ৩৯.১% তরুণ উদ্যোক্তা হতে চান, আর ১৮.৩% তরুণ বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
তাদের মতে, দেশে কর্মসংস্থানের সীমিত সুযোগ ও সামাজিক–রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাই এই মনোভাবের মূল কারণ।
তবুও তরুণদের মনোভাব আশাবাদী। ৬১.৭% তরুণ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ইতিবাচক ও আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন।
ভয়েস ফর রিফর্মের সহসমন্বয়ক ফাহিম মাশরুর বলেন, 'বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। তবে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অনেক সময়ই দেওয়া হয় না।'
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ডা. আব্দুন নূর তুষার বলেন, 'তরুণরা নানা হতাশার মধ্যেও দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী। এটি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক বার্তা।'
বিওয়াইএলসির নির্বাহী পরিচালক তাহসিনাহ আহমেদ বলেন,'তরুণরা এখন রাজনৈতিকভাবে সচেতন ও সামাজিকভাবে জাগ্রত। তাদের মতামতকে নীতি প্রণয়নে যুক্ত করা এখন সময়ের দাবি।'
