চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে থাকছে না পোষ্য কোটা, কমেছে আবেদন যোগ্যতা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য প্রযোজ্য 'পোষ্য কোটা' বাতিল করা হয়েছে।
একইসঙ্গে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল সার্বিকভাবে অবনতি হওয়ায় আবেদনের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতার জিপিএ কমানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, 'ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনেক দিনের শিক্ষার্থীদের পোষ্য কোটা বাতিলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা এটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় 'ওয়ার্ড কোটা' বা পোষ্য কোটা বাদেও ৯ ধরনের কোটা বহাল থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, বিদেশি শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, অনগ্রসর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালি, শারীরিক প্রতিবন্ধী, বিকেএসপি খেলোয়াড়, পেশাদার খেলোয়াড় ও দলিত জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী।
গত জুলাই মাসের ছাত্র আন্দোলনের পর শিক্ষার্থীরা ওয়ার্ড কোটা বাতিলের দাবি জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষে কোটা দুই-তৃতীয়াংশ কমিয়ে দেওয়া হয়। এবার পুরোপুরি বাতিল করা হলো।
পাশাপাশি আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে শিক্ষার্থীদের এইচএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ'র ক্ষেত্রেও শিথিলতা আনা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অফিসের একাডেমিক শাখার ডেপুটি রেজিস্টার এস এম আকবর হোছাইন বলেন, 'শুধু ২০২৫ সালে এইচএসসি পাশ করা শিক্ষার্থীদের আবেদনের যোগ্যতার জিপিএ ০.৫০ কমানো হয়েছে। অন্যদের জন্য এ সুযোগ থাকছে না।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২ জানুয়ারি, 'এ' ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে। এরপর ৩ জানুয়ারি 'ডি' ইউনিট, ৯ জানুয়ারি 'সি' ইউনিট, এবং ১০ জানুয়ারি 'বি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও, উপ-ইউনিটগুলোর মধ্যে, 'ডি-১' ইউনিটের (শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ) পরীক্ষা হবে ৫ জানুয়ারি, 'বি-১' ইউনিটের ৭ জানুয়ারি এবং 'বি-২' ইউনিটের পরিক্ষা ৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে ১ ডিসেম্বর এবং চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
'এ' ইউনিটে (বিজ্ঞান অনুষদ) মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে (চতুর্থ বিষয়সহ) মোট জিপিএ–৭.৭৫ থাকতে হবে। আর আলাদাভাবে মাধ্যমিকে অন্তত ৪ এবং উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ–৩.২৫ থাকতে হবে।
'বি' ইউনিটে (কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ) মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের মোট জিপিএ–৭ থাকতে হবে। আর বিজ্ঞান ও ব্যবসায় বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য জিপিএ–৭.৫০ নির্ধারণ করা হয়েছে।
'সি' ইউনিটে (ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ) ন্যূনতম যোগ্যতা মোট জিপিএ–৭.৫০ থাকতে হবে।
'ডি' ইউনিটে (সমন্বিত ইউনিট) সব বিভাগের শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারবে, যেখানে ন্যূনতম জিপিএ–৭ থাকতে হবে।
তবে এটা শুধু চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য। যারা দ্বিতীয়বারের মতো পরীক্ষায় অংশ নেবেন, তাদের জন্য আগের যোগ্যতাই বজায় থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, 'এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অনেকের ফলাফল খারাপ হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে যারা দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেবেন, তাদের জন্য এ সুযোগ থাকছে না। তাদের জন্য আগের জিপিএ যোগ্যতাই বহাল থাকবে।'
