নতুন সাক্ষাৎকারে হাসিনা নিরাপত্তা বাহিনীর ‘কিছু সদস্যের ভুলের’ কথা বললেও, নেই কোনো অনুশোচনা
জুলাই অভ্যুত্থানের সময় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ১৪ শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় আগের এক সাক্ষাৎকারে কোনো অনুশোচনা প্রকাশ না করলেও, এবার শেখ হাসিনা এই নির্মম কর্মকাণ্ডের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর 'কিছু সদস্যের ভুলকে' দায়ী করেছেন।
ভারতীয় সংবাদপত্র 'দ্য হিন্দু'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন, যা গতকাল প্রকাশিত হয়। তবে হাসিনা 'ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোকে' সমর্থন করে বলেছেন, সেগুলো ছিল 'পরিস্থিতি অনুযায়ী যথাযথ, সরল বিশ্বাসে গৃহীত এবং প্রাণহানি কমানোর উদ্দেশ্যে নেওয়া।'
জুলাই অভ্যুত্থানের সময়, যার চূড়ান্ত পরিণতিতে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যান, নিরাপত্তা বাহিনী আন্দোলনকারীদের ওপর নির্দয়ভাবে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেছিল। ফ্যাক্ট-চেকারদের দ্বারা যাচাইকৃত অডিও কলে শোনা গেছে, শেখ হাসিনা নিজেই ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন সেই আন্দোলনকে দমন করতে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের নির্দেশ দিচ্ছেন।
আগের মতোই এবারের সাক্ষাৎকারেও তিনি আন্দোলন দমনে নিজের ভূমিকার কথা একবারও উল্লেখ করেননি কিংবা নিহতদের জন্য কোনো অনুশোচনাও প্রকাশ করেননি।
'কিছু সদস্য ভুল করেছে'
সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, 'মাঠ পর্যায়ে আমাদের নিরাপত্তা কর্মীরা দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং সহিংস পরিস্থিতির মোকাবিলা করছিল। সহিংসতা মোকাবিলায় নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্যের সাড়া দেওয়ার পদ্ধতিতে অবশ্যই ভুল হয়েছিল, কিন্তু ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো ছিল পরিস্থিতি অনুযায়ী যথাযথ, সরল বিশ্বাসে গৃহীত এবং প্রাণহানি কমানোর উদ্দেশ্যে নেওয়া।'
নির্বাচন বর্জন নিয়ে সুর বদল
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বর্জনের জন্য দলীয় সমর্থকদের প্রতি তার আগের আহ্বানের বিরোধিতা করে তিনি সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি তার সমর্থকদের নির্বাচন বর্জন করতে বলেননি।
হাসিনা বলেন, 'আমি বিষয়টি পরিষ্কার করতে চাই: আমি নির্বাচন বর্জনের ডাক দিইনি। আমি যা বোঝাতে চেয়েছিলাম তা হলো, লাখ লাখ আওয়ামী লীগ ভোটার যদি তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়, তাহলে তারা ভোটই দেবে না।'
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, 'যা-ই ঘটুক না কেন, আমাদের প্রচারণা শান্তিপূর্ণ হবে। বাংলাদেশের এখন আর কোনো সহিংস বিশৃঙ্খলা কাম্য নয়।'
