গণভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধে শঙ্কিত ব্যবসায়ীরা, চান নির্বাচিত সরকার
জুলাই সনদ বাস্তবায়নকে ঘিরে গণভোট আয়োজন কবে হবে- এ প্রশ্নে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বিপরীত অবস্থান ব্যবসায়ীদের মধ্যে গভীর শঙ্কা তৈরি করেছে।
তাদের মতে, দেশে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে আস্থা ফেরাতে হলে নির্ধারিত সময়ে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের কোনো বিকল্প নেই। ব্যবসায়ীরা সতর্ক করে বলেছেন, গণভোট বা অন্য কোনো ইস্যুতে নির্বাচন নিয়ে জটিলতা তৈরি হলে তা দেশের অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে দেশে অনৈক্য সৃষ্টির প্রচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করে বরাবরের মতোই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোট আয়োজনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে।
অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজনের দাবি জানিয়েছে। প্রয়োজনে জাতীয় নির্বাচন পেছানোরও আহ্বান জানিয়েছে দলটি। একইভাবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)ও জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট আয়োজনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
গণভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর এ বিভক্তি ব্যবসায়ীদের উদ্বিগ্ন করে তুলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ এবং বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি ফজলে শামীম এহসান।
আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, 'আগামী নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হতেই হবে। গণভোট আয়োজনকে কেন্দ্র করে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যে জটিলতা সৃষ্টির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, সরকার প্রধানের উচিত তা মোকাবেলা করে সঠিক সময়ে নির্বাচনের আয়োজন করা।'
তিনি আরও বলেন, 'ব্যবসায়ীরা একটি নির্বাচিত সরকারের জন্য অপেক্ষা করছে। সময়মতো নির্বাচন না হলে ব্যবসায়ীদের আস্থা আরও তলানিতে নেমে যাবে, যা সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতি, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।'
বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, 'যারা বিভিন্ন অজুহাতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তারা দেশের অর্থনীতির শত্রু এবং দেশেরও শত্রু। কারণ, নির্বাচিত সরকার না এলে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করবে না, যা অর্থনীতির পাশাপাশি দেশকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।'
তিনি আরও যোগ করেন, 'বর্তমানে সব সূচকেই অর্থনীতির অবস্থা খারাপ। বিনিয়োগ নেই, কর্মসংস্থান হচ্ছে না। বিভিন্ন দেশ আমাদের ভিসাও দিচ্ছে না। তাই দ্রুত নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন। না হলে এসব পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।'
