নির্বাচনে ১৫০ থেকে ২০০ জনের পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে ইইউ: রাষ্ট্রদূত মিলার
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের একটি বড় প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার কথা জানান।
মিলার বলেন, ইইউ পর্যবেক্ষক দল এখনো চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। তবে এটি ১৫০ থেকে ২০০ সদস্যের মধ্যে থাকতে পারে। কিছু প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রায় ছয় সপ্তাহ আগে এবং অন্যরা ভোটের সপ্তাহখানেক আগে যোগ দেবেন।
প্রধান উপদেষ্টাকে তিনি বলেন, ২০০৮ সালের পর এই প্রথম ইইউ বাংলাদেশে এ ধরনের পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে। একই সঙ্গে ভোট চলাকালে স্থানীয় পর্যবেক্ষক নিয়োগেও সহায়তা করবে ইইউ।
ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে উভয়পক্ষ সুশাসন ও সাংবিধানিক সংস্কার, নির্বাচনী প্রস্তুতি, বিচার বিভাগীয় ও শ্রম সংস্কার, বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক এবং দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
জুলাইয়ের জাতীয় সনদের প্রশংসা করে এটিকে একটি 'অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ' নথি হিসেবে বর্ণনা করে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, এটি (বাংলাদেশে) গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে সুগম করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এ সময় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জোরদারে সম্প্রতি অনুমোদিত শ্রম আইন সংস্কার ও উদ্যোগের প্রশংসা করে এগুলোকে 'উল্লেখযোগ্য সাফল্য' বলেও তিনি অভিহিত করেন।
ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রচেষ্টায় ইইউর অব্যাহত সমর্থনের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, 'এগুলো সবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।' সেই সঙ্গে আসন্ন নির্বাচনকে 'দেশের সুনাম পুনর্বিন্যাসের সুযোগ' হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের প্রক্রিয়া যেন নির্বিঘ্ন হয়, সে লক্ষ্যে ইইউ বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
বৈঠকে উভয়পক্ষ অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির সম্ভাবনা এবং বিমান চলাচল ও জাহাজ চলাচলে নতুন সম্ভাবনার সন্ধানসহ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে আরও গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। মানবপাচার এবং অবৈধ অভিবাসন রোধে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়েও তারা সহমত পোষণ করে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া টার্মিনালের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ গ্লোবাল শিপিং জায়ান্ট এপি মোলার-মায়ের্সকের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মিলার জানান, কোম্পানি লালদিয়াকে এই অঞ্চলের শীর্ষস্থানীয় টার্মিনালগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে গড়ে তুলতে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে।
এছাড়াও নির্বাচনী পরিবেশ, প্রার্থীদের যোগ্যতা এবং ভোটের আগে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে যথাযথ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার বিষয়ে উভয় পক্ষ আলোচনা করে।
