মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক সেনা কর্মকর্তাদের ১৫ জন এখনো কর্মরত: প্রসিকিউটর
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম, হত্যা, নির্যাতন ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলায় আসামি ২৫ সেনা কর্মকর্তার মধ্যে ১৫ জন এখনো কর্মরত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজি এমএইচ তামীম।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ওই ১৫ কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে হাজির হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে তাদের ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় সাব-জেলে নেওয়া হয়।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, 'আপনি সেনা কর্মকর্তাদের "সার্ভিং" বলছেন। কিন্তু সংশোধিত আইন অনুযায়ী, ফরমাল চার্জ বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠিত হলেই তাদের চাকরি থাকার কথা নয়। তাহলে তারা চাকরিচ্যুত না কর্মরত; কোনটি বলা হবে?'
জবাবে প্রসিকিউটর তামীম বলেন, 'যেটা আইনে বলা আছে, সেটাই আইনের ব্যাখ্যা। এখন সেনা সদর দপ্তর সিদ্ধান্ত নেবে, এই আইন কবে তাদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করবে। যতক্ষণ না তা প্রয়োগ হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তো "সার্ভিং" (কর্মরত) বলাই যায়।'
মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলার মধ্যে দুটি দায়ের করা হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম ও নির্যাতনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে। অপর মামলাটি গত জুলাইয়ে গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায়।
এসব মামলায় ২৫ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তা আসামি হিসেবে আছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জন কর্মরত, একজন অবসরোত্তর ছুটিতে (এলপিআর) এবং ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত।
প্রসিকিউটর তামীম জানান, গুম-নির্যাতনের দুটি মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ আগে ছিল ২০ নভেম্বর। তবে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে তারিখ পরিবর্তনের আবেদন করা হলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করে ২৩ নভেম্বর নির্ধারণ করেছে। তিনি বলেন, 'প্রসিকিউশনের নিজস্ব জটিলতার কারণে এই সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছিল।'
এ ছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রামপুরা এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দুই সেনা কর্মকর্তা আসামি রয়েছেন। এর পরবর্তী শুনানির তারিখ আগে ৫ নভেম্বর থাকলেও পরিবর্তনের আবেদন মঞ্জুর করে আদালত নতুন তারিখ ২৪ নভেম্বর ধার্য করেছে বলে জানান প্রসিকিউটর গাজি এমএইচ তামীম।
