লালন শাহের তিরোধান দিবস উৎসবে ৭৮ মোবাইল চুরির অভিযোগ

ফকির লালন শাহের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় আয়োজিত তিন দিনব্যাপী উৎসবে লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। বাউল, সাধক ও লালনভক্তদের ভাষায়, কয়েক দশকের মধ্যে এমন বিশাল জনসমাগম আগে দেখা যায়নি। তবে এ বিপুল ভিড়ের সুযোগ নেয় একাধিক চোরচক্র। উৎসব চলাকালে সক্রিয় ছিল মোবাইল ফোন চোর, পকেটমার ও জাল টাকার ব্যবসায়ীরা।
এ তিন দিনে মোবাইল চুরির ঘটনায় অন্তত ৭৮ জন ভুক্তভোগী কুমারখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। পাশাপাশি জাল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় র্যাব বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে। পুলিশ চুরির অভিযোগে এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিরুল ইসলাম।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন- সিরাজগঞ্জের শামিম তালুকদার (২৮), নেত্রকোনার সেফায়েত উল্লাহ (১৯), কুষ্টিয়ার মিরপুরের সজিব (১৯) ও তানজিম (২০), মৌলভীবাজারের রমজান আলী (২৬), ময়মনসিংহের রাজিব মিয়া (২০), পাবনার আব্দুল মালেক (২৫), গাইবান্ধার মামুন তালুকদার (৫০) এবং জাল টাকার মামলায় কুষ্টিয়ার সবুজ (২৪)।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আখড়াবাড়িতে প্রবেশের সময় কিংবা মেলা প্রাঙ্গণে অতিরিক্ত ভিড়ের মধ্যেই মুহূর্তের মধ্যে হারিয়ে গেছে তাদের মোবাইল ফোন।
মিরপুরের বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, 'শনিবার রাতে ভিড়ের মধ্যে বন্ধুর সঙ্গে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি, পকেটে থাকা আমার রেডমি নোট-১৪ ফোনটি নেই।'
একাত্তর টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন কোহিনুর ইসলামও তার মোবাইল ফোন হারানোর অভিযোগ করেছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, 'তিন দিনে ৭৮টি চুরির অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় ১০-১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'
কুমারখালী থানার ওসি খোন্দকার জিয়াউর রহমান জানান, শনিবার রাতে আখড়াবাড়ির প্রবেশপথ থেকে ২১ হাজার ৫০০ টাকার জাল নোটসহ সবুজ নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে র্যাব। পরে তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী এই লালন তিরোধান দিবসের উৎসবে ছিল আলোচনা সভা, লালনগীতি পরিবেশনা ও গ্রামীণ মেলা। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে রোববার (১৯ অক্টোবর) মধ্যরাতে সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় এবারের লালন উৎসব।