মিরপুরে অগ্নিকাণ্ড: বিষাক্ত সাদা ধোঁয়ায় দমকল বাহিনীর কাজ ব্যাহত, নিয়ন্ত্রণে লাগবে 'আরও সময়'
ঢাকার মিরপুরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় একটি সাততলা পোশাক কারখানা ও সংলগ্ন রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আগুন এখনও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এখনো ভবনের ভেতরে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে রাসায়নিক গুদামের প্রধান ফটক খুললেও ভেতর থেকে বের হওয়া ঘন ও বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে দমকলকর্মীদের পক্ষে ভবনে প্রবেশ করে আগুন সম্পূর্ণ নেভানো সম্ভব হয়নি।
দুপুরে ঘটনাস্থলে এক ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক কাজী নজমুজ্জামান বলেন, 'আমাদের বিশেষজ্ঞ দল সকালে কেমিক্যাল স্যুট পরে গুদামের প্রধান ফটক খুলতে সক্ষম হয়েছে, কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করা যায়নি। ভেতরে প্রচুর সাদা ধোঁয়া রয়েছে, যা অত্যন্ত বিষাক্ত। ফলে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও সময় লাগবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে, তবে দীর্ঘ সময় লাগবে কেমিক্যাল পুরোপুরি অপসারণ করতে। আমাদের উর্ধতন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত দেবেন, আমরা পরবর্তীতে কী করব।'
গতকাল সোমবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে পোশাক কারখানার পাশের একটি অবৈধ রাসায়নিক গুদাম থেকে।

আগুন দ্রুতই পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে, এতে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, ঘটনাস্থলে ১২টি ইউনিট পাঠানো হয় এবং কয়েক ঘণ্টার প্রচেষ্টার পর মূল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।


তবে ভবনের ভেতরে এখনও জ্বলতে থাকা আগুন, ধোঁয়া ও বিষাক্ত গ্যাসের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলের আশপাশে ৩০০ মিটার পর্যন্ত এলাকায় বসবাসকারীদের দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে, কারণ আগুনের ধোঁয়ায় থাকা বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ এখনও বাতাসে মিশে ছড়িয়ে পড়ছে।


এছাড়া কাছাকাছি অবস্থিত কয়েকটি পোশাক কারখানাকে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে কর্মীরা ধোঁয়া ও বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত না হন।
জ্বলন্ত রাসায়নিকের তীব্র দুর্গন্ধে শ্রমিকদের অনেককেই কর্মস্থল ছেড়ে যেতে দেখা গেছে।
ঘটনাস্থলে কাজ করা সাংবাদিক ও উদ্ধারকর্মীরাও বিষাক্ত ধোঁয়া থেকে বাঁচতে মুখে মাস্ক পরে সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করছেন।