চাকসুর ভোটগ্রহণ চলছে: ‘তিন ধাপে চেক হচ্ছেন ভোটাররা, জাল ভোটের সুযোগ নেই’—প্রধান নির্বাচন কমিশনার
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে স্বাক্ষরবিহীন ব্যালট পেপার, অমোচনীয় কালি মুছে যাওয়াসহ আইডি কার্ডের সাথে ভোটারের ছবি না মেলার কথা জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে ছাত্রদলের প্যানেল ও শিবির সমর্থিত 'সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট' প্যানেল।
এর জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, 'ভোট জাল করার সুযোগ নেই। তিন ধাপে চেক করে নেয়া হবে ভোট।'
আজ বুধবার বেলা ১২টার দিকে এ অভিযোগ জানায় ছাত্রদল প্যানেল এবং সাড়ে ১২টার দিকে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের পক্ষ থেকেও একই অভিযোগ দেওয়া হয়।
ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় বলেন, 'বারবার অমোচনীয় কালির কথা বললেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখছি না। প্রশাসন ইতোমধ্যে তাদের দায় স্বীকার করেছে। এটা ভোটের স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।'
শিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ইব্রাহিম রনি বলেন, 'স্বাক্ষর বিহীন ব্যালট পেপার গেলে ভোট জাল হওয়ার সুযোগ থাকে। এ ব্যপারে আমরা প্রশাসনের স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাই।'
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'অভিযোগটি আমাদের কাছে এসেছে। তবে আমরা বাংলাদেশে এরচেয়ে ভালো কালি পাইনি। এরচেয়ে ভালো কালি দিতে হলে বিদেশ থেকে আনতে হবে। কিন্তু কালি মুছে গেলেও একজন ভোটারের দ্বিতীয়বার ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। কারণ সবাইকে তিন ধাপে চেক করা হচ্ছে। প্রথমে ভোটারের সিরিয়াল নাম্বার চেক করা হচ্ছে, এরপর আইডি নাম্বার, এরপর ভোটারের নাম ও ছবি মিলিয়ে দেখে স্বাক্ষর নেওয়া হচ্ছে। তাই কারো পক্ষে দ্বিতীয়বার ভোট দেওয়া সম্ভব নয়। কালি মুছে গেলেও এটা কোনো সমস্যা নয়।'
এছাড়াও আইটি ভবনে স্বাক্ষর বিহীন ব্যালট পেপারের বিষয়ে তিনি বলেন, 'কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তাই আমাকে এটি জানিয়েছেন। এটা আমাদের অসাবধানতাবশত কিছু যা ভুল হয়েছে। ১০টা বা ১২টা যেই ব্যালট ব্যাপারে স্বাক্ষর হয়নি সেগুলোতে আমরা ওই কেন্দ্রের কমিশনার, রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর নিয়ে আলাদা করে লিখে রাখবো যাতে গণনার সময় আমরা বুঝতে পারি যে এই কয়টাতে স্বাক্ষর ছিল না। সুতরাং এখানে কারচুপির কোন সুযোগ থাকবে না।'

এদিকে ভোট দিয়ে বের হওয়া মেরিন সায়েন্স ইনস্টিটিউটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ওমর হাসনাত ছিদ্দিক তন্ময় বলেন, 'আমি বিজ্ঞান অনুষদ কেন্দ্রে ভোট দিয়েছি। ভোট খুব সুন্দরভাবে চলছে।'
কালি মুছে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমার হাতে যে কালি দেওয়া হয়েছে, সেটাও উঠে গেছে। তবে আমি মনে করি এতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ ভোটার তালিকায় ভোটারের ছবি দেখে ক্রসচেক করা হচ্ছে। পাশাপাশি সাক্ষরও নেওয়া হচ্ছে। তাই যে একবার ভোট দিচ্ছে, তার দ্বিতীয়বার ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। শেষপর্যন্ত এভাবে চললে আশা করছি সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন হবে।'
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর উৎসবমুখর পরিবেশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ এবং কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের দুটি ভবনসহ মোট পাঁচটি ভবনের ১৫টি কেন্দ্রে একযোগে বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল ৯টা থেকেই ভোট কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।

সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা সারিবদ্ধভাবে ভোট দিতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছেন। নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। প্রক্টরিয়াল টিমের পাশাপাশি মোতায়েন রয়েছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্য। সব কেন্দ্রেই বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে দায়িত্বে থাকা শিক্ষক মোহাম্মদ রিদওয়ান পারভেজ টিবিএসকে বলেন, 'এখানে প্রাথমিক পর্যায়ে চেকিং চলছে। যার কাছে আইডি কার্ড বা ব্যাংক পে-স্লিপ নেই, তাকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আচরণবিধি কঠোরভাবে মানা হচ্ছে। অনুমোদিত যানবাহন ছাড়া কোনো গাড়ি ফটক পেরোতে পারছে না।'

ব্যবসায় প্রশাসন, সমাজবিজ্ঞান, বিজ্ঞান, কলা ও মানববিদ্যা এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের পাঁচটি ভবনের ১৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। এর মধ্যে ১৪টি কেন্দ্রে হল সংসদ এবং একটি কেন্দ্রে হোস্টেল সংসদের ভোটগ্রহণ হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ১১৭ নম্বর কক্ষে প্রথম ভোট দিয়েছেন আরবি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ছাত্র মিনহাজ কবির। প্রায় ১০ মিনিটের বেশি সময় নিয়ে ভোট দিয়েছেন তিনি। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে মিনহাজ বলেন, 'ক্যাম্পাসে প্রথম ভোট দিতে পেরে আমি আনন্দিত। আশা করছি, আমি যাদের ভোট দিয়েছি, তারা নির্বাচিত হবে। আর যারাই নির্বাচিত হবেন, তারা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করবেন। ৪০টি ভোট দিয়েছি। কোনো কষ্ট হয়নি। ভোট দিতে ভালো লেগেছে।'

ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার সাংবাদিকদের বলেন, 'উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হচ্ছে। আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি প্রেক্ষিতে আয়োজন করেছি। কোনো অভিযোগ নেই। সুন্দর পরিবেশে ভোট হচ্ছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে প্রচারণা করেছেন। এটা দেখে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।'
চাকসু নির্বাচনের তত্ত্বাবধায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, 'সকাল ৯টা থেকে শিক্ষার্থীরা লাইনে দাঁড়িয়েছেন। ৯টা থেকে ভোট কার্যক্রম শুরু তবে। ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে সাড়ে ৯টায়। বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। তবে শিক্ষার্থীরা যতক্ষণ লাইনে থাকবে আমরা ততক্ষণ ভোট নেব।'

সব মিলিয়ে ৬৫ থেকে ৭০টি ভোটকক্ষে পাঁচটি ব্যালট বাক্স ও পাঁচজন এজেন্ট রাখা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ৫০০ ভোটার ভোট দিতে পারবেন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য চাকসু ভবনে আলাদা কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যদের বড় একটি টিম মাঠে রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর পাশাপাশি ভোটের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে ক্যাম্পাসে স্থাপন করা হয়েছে ১৫টি বড় স্ক্রিন।
ভোটের দিনে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে সুবিধা দিতে চট্টগ্রাম নগর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১ বার শাটল ট্রেন এবং ৩০টি বাস চলাচল করছে। একজন শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য ২৬টি এবং হল সংসদের জন্য ১৪টি—মোট ৪০টি ভোট দিতে পারবেন।

এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম চাকসু নির্বাচন। এবার মোট ৯০৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, যার মধ্যে ৪১৩ জন কেন্দ্রীয় সংসদে এবং ৪৯৩ জন হল ও হোস্টেল সংসদে। ছাত্রদল, বাম সংগঠন, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ১৩টি প্যানেল অংশ নিচ্ছে নির্বাচনে। এছাড়া ৩৮৫ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মোট ভোটার ২৭ হাজার ৫১৮ জন, এর মধ্যে ১৬ হাজার ১৮৯ জন ছাত্র ও ১১ হাজার ৩২৯ জন ছাত্রী। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। ভোটকক্ষে রয়েছে ৭০০টি গোপন বুথ ও ৩০০টি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স।
ভোটারদের দীর্ঘ লাইন
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
নির্বাচনের দিনে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সানজিদা ফারিহা বলেন, '৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় খুব উচ্ছ্বসিত। ভোট দিতে এসে অনুভব করলাম, ছাত্র সংসদ আমাদের নিজস্ব গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মেয়েদের অংশগ্রহণের এই উৎসাহ সত্যিই প্রশংসনীয়।'

ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা প্রতিটি শিক্ষার্থীর পরিচয়পত্র তল্লাশি করে প্রবেশ নিশ্চিত করছেন। ভোটাররা ওএমআর পদ্ধতিতে পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশে নির্দিষ্ট কলম দিয়ে বৃত্ত ভরাট করে ব্যালট বাক্সে ফেলে দিচ্ছেন।
সাড়ে তিন ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৩৫ শতাংশ
চাকসু নির্বাচন ভোট গ্রহণ শুরুর প্রথম সাড়ে তিন ঘণ্টায় প্রায় ৩৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।
আজ সকাল সাড়ে ৯টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। তবে সকাল ৯টার আগ থেকেই ভোট কেন্দ্রের বাইরে লম্বা লাইন ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে।
চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, 'সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত প্রায় ৩৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।'
অমোচনীয় কালি ব্যবহার না করার ফলে কারচুপির শঙ্কা, ছাত্রদল ও শিবিরের ভিপি প্রার্থীর অভিযোগ
চাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণের সময় অমোচনীয় কালি ব্যবহার না হওয়ার কারচুপির শঙ্কা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদে ভোট প্রদান শেষে তারা এমন অভিযোগ করেন।
ছাত্রদল প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি কয়েক মিনিট আগে ভোট দিয়েছি। দেখুন, কালি মুছে গেছে। আমরা বার বার অমোচনীয় কালি ব্যবহারের দাবি জানিয়েছি। প্রশাসন শুনেনি। এখানে সূক্ষ্মভাবে ভোট কারচুপির আশঙ্কা রয়েছে। কারণ ২৮ হাজার শিক্ষার্থীকে ভোট কেন্দ্রে যাচাই করা সম্ভব না।'
তিনি আরও বলেন, 'অনেকের ছবির সঙ্গে চেহারার মিল কম। সেক্ষেত্রে কারচুপির আশঙ্কা রয়েছে। আমরা নির্বাচন কমিশনারকে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব।'

একই ভোট কেন্দ্রে ভোট প্রদান শেষে ছাত্রশিবিরের প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ইব্রাহিম হোসেন রনি সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রশাসন আমাদের সঙ্গে যতবার বসেছে, আমরা শুরু থেকেই অমোচনীয় কালি ব্যবহারের কথা বলেছি। কিন্তু দুঃখজনক বিষয়, শিক্ষার্থীদের মতামত উপেক্ষিত হয়েছে। আমরা কারচুপির শঙ্কার কথা বলব না। তবে আপনার দেখবেন কেমন হয়। আর ভোটের প্রক্রিয়া আমাদের কাছে ধীরগতি মনে হয়েছে।'

নির্বাচনে ভোটগ্রহণে বৈষম্যের অভিযোগ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ব্যবস্থাপনায় বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা। এসময় চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ভোটকেন্দ্র স্থাপন করেছে নির্বাচন কমিশন। এ কেন্দ্রে শুধু দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা দুই নির্বাচন কমিশনারের তত্ত্বাবধানের তাদের পছন্দের প্রতিনিধিদের ভোট দিচ্ছে।
তবে ব্রেইল পদ্ধতি না থাকা ও ভোট প্রদানের সময় সকলের সকাল ৯টা এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সকাল ১১টার পরে হওয়ায় বৈষম্যের অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা।

রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আয়েশা আক্তার বলেন, 'ভোট দিতে পেরে ভালো লাগছে। তবে আমরা খুব মর্মাহত। আমাদের ব্রেইল পদ্ধতির কথা বলা হলেও পরে সেই ব্যবস্থা করা হয় নাই। আবার সবার ভোট ৯টায় শুরু হলেও আমাদের শুরু হয়েছে ১১টায়। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সাথে এমন বৈষম্য করলে আমরা প্রশাসনের থেকে কি শিখবো?'
আরেক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের প্রতি যে বৈষম্য হয়েছে তাতে আমরা ভোটে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছি। আমরা চাই, নির্বাচিত হয়ে যে প্রতিনিধি আসুক তারা আমাদের প্রতি এই বৈষম্য দূর করবে।'
ভোট দিতে পেরে আনন্দিত শিক্ষার্থীরা
চাকসু নির্বাচনে ভোট দিতে পেরে শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বসিত। সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ভবনে ভোট দিতে লাইনে দাঁড়ান শিক্ষার্থীরা।
ভোটারদের মুখে ছিল আনন্দ ও প্রত্যাশার ছাপ। অনেকেই বলছেন, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক চর্চার নতুন সূচনা হচ্ছে।
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অঙ্কিতা দাস বলেন, 'চাকসু নির্বাচনের কথা শুনেই আমি এক্সাইটেড ছিলাম। অনেক ভালো লাগছে। বন্ধুরা সবাই একসাথে এসেছি ভোট দিতে। আশা করি সবকিছু ভালোভাবেই শেষ হবে এবং নির্বাচিত হলে যারা যে ইশতেহার দিয়েছে, তারা সে অনুযায়ী আমাদের জন্য কাজ করবে।'
রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুব মোর্শেদ বলেন, 'ভোট দিয়ে ভালো লেগেছে। সময় লাগবে ভেবেছিলাম, কিন্তু তাড়াতাড়ি হয়ে গেছে। পুরো প্রক্রিয়াটা সহজভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি।'
ভোটকেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে এসে সেলফি তুলেছেন, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। অনেকে জানিয়েছেন, এত বছর পর নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়ে তারা গর্বিত ও আনন্দিত।
প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা আশা করছেন, শান্তিপূর্ণভাবে দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ শেষ হলে নতুন চাকসু গঠনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক চর্চা আরও দৃঢ় হবে।