আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধের আহ্বান সম্মিলিত ছাত্র সংসদের
আওয়ামী লীগের 'দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের' বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং দলটির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত ছাত্র সংসদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ চার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু, জাকসু, রাকসু ও চাকসু) মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশজুড়ে নিষিদ্ধ সংগঠনের 'সন্ত্রাসীদের' বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশের সকল দেশপ্রেমিক নাগরিক, ছাত্র, শ্রমিক ও জনতাকে আহ্বান জানাচ্ছি—গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে। দেশের যে প্রান্তেই এই নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের পাওয়া যাবে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে।'
সম্মিলিত ছাত্র সংসদ বিবৃতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, 'অবিলম্বে এই দেশদ্রোহী গণহত্যাকারীদের কঠোর হাতে দমন করতে হবে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে নিয়মিত টহল জোরদার করতে হবে এবং দেশজুড়ে চিরুনি অভিযান চালিয়ে জাতিকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে নিরাপদ রাখতে হবে। পাশাপাশি জুলাইয়ে সংঘটিত গণহত্যার বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে।'
চার ভিপির ভাষ্য, 'বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা-শ্রমিকসহ মুক্তিকামী জনগণ ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আঠারো বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে। সহস্র শহীদের রক্তে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ এখন ফ্যাসিবাদী কাঠামোর চূড়ান্ত বিলুপ্তির পথে। কিন্তু ঠিক তখনই বিতাড়িত ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।'
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'লগি-বৈঠার তাণ্ডব থেকে শুরু করে গুম-খুন, গণহত্যা এবং রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল।'
ছাত্র সংসদের দাবি, দেশজুড়ে নাশকতা, অগ্নিকাণ্ড, ককটেল বিস্ফোরণ এবং ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার ষড়যন্ত্র স্পষ্ট হলেও সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা 'সন্তোষজনক নয়'। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে তারা সরকারকে 'জিরো টলারেন্স' নীতি গ্রহণের আহ্বান জানায়।
জুলাই জাতীয় সনদ বিষয়ে ছাত্র সংসদের এক ভিপি বলেন, 'জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান, গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে পতিত স্বৈরাচার ও তাদের দোসররা দেশে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টায় লিপ্ত। জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা রক্ষায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের শেকড় উপড়ে ফেলতে সরকারকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'দেশের বিভিন্ন স্থানে জুলাই গণহত্যায় জড়িত সন্ত্রাসীরা এখনো নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এসব আওয়ামী ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।'
