দুর্গাপূজা: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি সরকারের

দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, 'সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার লক্ষ্যে দুষ্কৃতকারী ও গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো অবস্থাতেই এটি বরদাশত করা হবে না।'
আজ রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানান উপদেষ্টা।
এসময় তিনি বলেন, 'সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রতিরোধ করে জনসমক্ষে সঠিক ও স্পষ্ট বার্তা প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'দুর্গাপূজা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। শুধুমাত্র কিছু সংখ্যক ফ্যাসিস্টের দোসর শঙ্কার কথা বলছে।'
উপদেষ্টা বলেন, এবারের শারদীয় দুর্গাপূজায় মণ্ডপের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বেড়েছে '
তিনি বলেন, 'এবার সারাদেশে পূজামণ্ডপের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৫৫টি, যা গতবারের চেয়ে প্রায় এক হাজার বেশি।'
তিনি আরও বলেন, 'দুর্গাপূজা উপলক্ষে গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিটি পূজামণ্ডপে আনসার সদস্যরা নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন শুরু করেছে। আগামী ২ অক্টোবর দশমী (প্রতিমা বিসর্জনের দিন) পর্যন্ত মোট ৯দিন সারাদেশে ২ লাখ ৩ হাজার ৫৬৪ জন আনসার সদস্য এ দায়িত্ব পালন করবে।'
উপদেষ্টা বলেন, 'দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় সারাদেশে প্রায় এক লাখ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য কাজ করছে। তাছাড়া ৭০ হাজার পুলিশ এবং ৪৩০ প্লাটুন বিজিবি পূজামণ্ডপের সার্বিক নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছে।'
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, 'প্রতিটি পূজামণ্ডপে মণ্ডপ কমিটির সাতজন সদস্য পালাক্রমে ২৪ ঘন্টা দায়িত্ব পালন করবে।'
তিনি বলেন, 'দুর্গাপূজা উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীদের সহজে শনাক্তকরণের জন্য পুলিশ ও আনসারসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।'
উপদেষ্টা বলেন, 'প্রতিটি পূজামণ্ডপের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য স্বেচ্ছাসেবীদের এনটিএমসি'র অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ছাত্র ও জনগণকে অন্তর্ভুক্ত করে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত টহল পরিচালনা করছে।'
তিনি আরও বলেন, 'তাছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ মন্দির ও পূজামণ্ডপের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।'
উপদেষ্টা এসময় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে, নিরাপদে ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভায় দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে গতকাল সংঘটিত ঘটনা, রাকসু ও চাকসু নির্বাচন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা বিশেষ করে মাদক চোরাচালান প্রতিরোধ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সভায় আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সদস্যরা অংশ নেন।