দুবাইয়ে ১২০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ: সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে সিআইডির মামলা

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মামলায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামান ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পাচারকৃত এই অর্থ দিয়ে দুবাইয়ে ২২৬টি ফ্ল্যাট কেনার পাশাপাশি একাধিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও ব্যবসায় বিনিয়োগ করার প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সিআইডি জানায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে পর্যায়ক্রমে ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এবং আরামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন।
অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দুবাইয়ের আল বারশা, বুর্জ খলিফা, জাবেল আলী, মারসা দুবাইসহ বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় ৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ১৬৮ দিরহাম মূল্যের ২২৬টি ফ্ল্যাট কিনেছেন।
এছাড়া তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের নামে আল বারশা এলাকায় ২২ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৯ দিরহাম মূল্যের দুটি সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে।
তদন্তে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে দুবাই ইসলামিক ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও ফার্স্ট আবুধাবি ব্যাংকে চারটি অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলেছে। এসব হিসাবে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৩১১ কোটি ২৬ লাখ টাকার সমমূল্যের দিরহাম ও মার্কিন ডলার লেনদেন হয়েছে।
এছাড়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিল্ডিং উপকরণ ব্যবসার জন্য 'জেবা ট্রেডিং এফজেডই' এবং সফটওয়্যার ব্যবসার জন্য 'র্যাপিড র্যাপ্টর এফজেডই' নামে দুটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনার তথ্যও পেয়েছে সিআইডি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রেকর্ড অনুযায়ী, বিদেশে কোম্পানি নিবন্ধন, বিনিয়োগ বা সম্পত্তি অর্জনের জন্য সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে সরকার কোনো অনুমতি দেয়নি। সিআইডির মতে, এভাবে বিদেশে সম্পত্তি ক্রয়, কোম্পানি নিবন্ধন এবং ব্যাংক হিসাবে অর্থ জমা করার মাধ্যমে তিনি প্রায় ১২০০ কোটি টাকা পাচার করেছেন, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫) অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সিআইডি জানিয়েছে, অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন এবং অজ্ঞাত আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য তাদের তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।