স্ত্রীসহ জি এম কাদেরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
এই আদেশ দিয়েছে ঢাকা মহানগর ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র স্পেশাল জজ ইব্রাহীম মিয়ার আদালত, দুদকের আবেদন বিবেচনা করে।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন।
নিষেধাজ্ঞার আদেশে বলা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন। বিদেশে গেলে অনুসন্ধান ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় তাদের দেশত্যাগে বাধা দেওয়া হলো।
আদেশে স্পেশাল ব্রাঞ্চের বিশেষ পুলিশ সুপার ও ইমিগ্রেশন-প্রশাসন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুদকের অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন দিতে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছিল। এই টাকা মূলত জি এম কাদেরের সুবিধার্থে নেওয়া হয়েছিল।
অর্থ না দেওয়ায় অধ্যাপক মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং তার স্থলে শেরীফা কাদের সংসদ সদস্য হন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, জি এম কাদের জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হয়েছেন এবং মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ সংগ্রহ করে বিদেশে পাঠিয়েছেন।
পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ৩০১ সদস্যের হলেও বর্তমানে ৬০০–৬৫০ জন সদস্য যুক্ত করা হয়েছে, যা পদ বাণিজ্যের প্রমাণ বলে দুদক উল্লেখ করেছে।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী, জি এম কাদেরের নামে নগদ ৪৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং ৮৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকার একটি জিপ গাড়ি রয়েছে।
শেরীফা কাদেরের নামে নগদ ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, ব্যাংকে ২৮ লাখ ৯ হাজার টাকা এবং ৮০ লাখ টাকার জিপ গাড়ি রয়েছে। তাদের স্থাবর সম্পদের মধ্যে লালমনিরহাট ও ঢাকায় জমি ও ফ্ল্যাটও আছে।
জি এম কাদের ১৯৯৬ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন এবং ২০০৯–২০১৪ সালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।