আওয়ামী লীগের মিছিলে ‘স্লোগান দিয়ে’ গ্রেপ্তার বাকপ্রতিবন্ধী সাইদের জামিন

রাজধানীর গুলিস্তানের গোলাপশাহ মাজারের পাশে আওয়ামী লীগের একটি ঝটিকা মিছিলে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার বাকপ্রতিবন্ধী সাইদ শেখের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালত এক হাজার টাকার মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন। রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ২৫ আগস্ট সাইদকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার উপপরিদর্শক মাকসুদুল হাসান। ওই শুনানিতে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরদিন সাইদের আইনজীবী তাকে প্রতিবন্ধী দাবি করে জামিনের আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালত ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারকে নির্দেশ দেন, সাইদ প্রতিবন্ধী কি না তা নির্ধারণের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরীক্ষা রিপোর্ট দাখিল করতে। তবে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে কোনো প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।
সাইদের পক্ষে আইনজীবী উম্মে হাবিবা আদালতে বলেন, 'সাইদ বাকপ্রতিবন্ধী, কথা বলতে পারে না, নিজে ভাতও খেতে পারে না। সে কীভাবে মিছিলে স্লোগান দেবে। আমাদের ন্যায়বিচার চাই।'
রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর দাবি করেন, 'সাইদ প্রতিবন্ধী নয়, শুধু তোতলা বা অস্পষ্টভাষী। আওয়ামী লীগের লোকজন তাকে মিছিলে নিয়ে এসেছে। প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আমরা জামিনের বিরোধিতা করছি।'
দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক বলেন, 'মানবিক দিক বিবেচনায় এই মামলাটি তিনবার আমার কাছে এসেছে, একবারও আমি জামিন রিজেক্ট করিনি।' এ বিষয়ে আদালত পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত সাইদের জামিন মঞ্জুর করেন।
অন্যদিকে, সাইদের আইনজীবী মোহাম্মদ লিটন মিয়া জানান, তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই এবং আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী বুধবার সাইদ কারামুক্ত হবেন।
মামলায় বলা হয়, ২৫ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গুলিস্তানের গোলাপশাহ মাজারের পাশে সাইদ শেখসহ কয়েকজন সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্য ও তাদের সহায়কেরা সরকার ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্ন ও ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে সমবেত হয়। তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ তাদের আটক করলে অন্যরা পালিয়ে যায়। পল্টন মডেল থানার এসআই মোহাম্মদ আবু ইউসুফ সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেন।