দুর্নীতির মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি কলিমউল্লাহ ৫ দিনের রিমান্ডে

বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (২৭ আগস্ট) শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়ার আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে কলিমউল্লাহকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। ওইদিনই তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এর আগে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারি পরিচালক মিনহজ বিন ইসলাম গত মঙ্গলবার তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
আদালত আসামির উপস্থিতিতে শুনানির দিন বুধবার ধার্য করেন।
শুনানিকালে নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে আদালতে হাজির করা হয়।
কলিমউল্লাহর পক্ষের আইনজীবী শাহনাজ সুমি রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, নিয়মবর্হিভূতভাবে তিনি কিছু করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সবকিছুতে একার বিষয় থাকে না। চাইলেই ২/৪ জন টাকা আত্মসাৎ করে নিতে পারে না। সবকিছু ডকুমেন্টারি ব্যাপার। তিনি কিছু আত্মসাৎ করেননি।
তিনি আরও দাবি করেন, নিয়ম-কানুন মেনেই সব কিছু করেছেন। তিনি একজন বয়স্ক, অসুস্থ মানুষ। তার রিমান্ড বাতিল করে জামিনের প্রার্থনা করছি।
এরপর দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর দেলোয়ার জাহান রুমি এর বিরোধীতা করেন।
তিনি বলেন, 'দুদকের মামলা হঠাৎ করে হয় না। দীর্ঘ সময় অনুসন্ধান হয়। আসামিও সে বিষয়ে অবগত থাকেন।'
তিনি মামলার অভিযোগ তুলে ধরে রিমান্ডের পক্ষ এবং জামিনের বিরোধীতা করেন।
দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
গত ১৮ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কলিমউল্লাহসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও প্রকল্প পরিচালক এ কে এম নূর-উন-নবী, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার মো. আ. সালাম বাচ্চু এবং এম এম, হাবিবুর রহমান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ, অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপি উপেক্ষা করে নকশা পরিবর্তন করেন।
তারা ৩০ কোটি টাকা মূল্যের বেশি চুক্তি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অনুমোদন ছাড়া করেন। ঠিকাদারের রানিং বিল থেকে কেটে নেওয়া নিরাপত্তা জামানতকে এফডিআর হিসেবে ব্যাংকে জমা রাখা এবং সেইউ এফডিআর ঠিকাদারকে লোন দেওয়ার জন্য নো অবজেকশন সার্টিফিকেট অনুমোদন তথা গ্যারান্টার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের চার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিতে অগ্রিম অর্থ দেওয়ার কোনো আইন না থাকা সত্ত্বেও অগ্রিম বিল দেন এবং অগ্রিম দেওয়া বিল সমন্বয়ের আগেই বিলের বিপরীতে প্রদত্ত ব্যাংক গ্যারান্টিগুলো অবমুক্ত করা হয়।
প্রথম পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া ড্রইং বা ডিজাইন না মেনে সরকারি খাতে ক্রয় পদ্ধতির বিধি বহির্ভূতভাবে দ্বিতীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়। অস্বাভাবিক হারে মূল্য দাখিল বা ফ্রন্ট লোডিং থাকা সত্ত্বেও পিপিআর ২০০৮ এর বিধান অনুযায়ী দরপত্র মূল্যায়ন না করার অভিযোগ রয়েছে।