সংসদীয় সীমানা নির্ধারণ শুনানিতে বিএনপি-এনসিপির মারামারির ঘটনায় ইসির জিডি

নির্বাচন কমিশন (ইসি) গত রোববার (২৪ আগস্ট) সংসদীয় সীমানা নির্ধারণের খসড়া নিয়ে প্রথম দিনের শুনানির সময় বিএনপি ও ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)-এর প্রতিনিধিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় শের-ই-বাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) দায়ের করেছে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) জিডি দায়ের করা হয়, তবে এতে কোনো ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়নি, জানিয়েছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা কোনো নাম উল্লেখ করিনি, তবে শুনানির সময় সংঘর্ষের ঘটনা পুলিশকে অবহিত করেছি।'
সংঘর্ষটি ইসি ভবনে ঘটে, যখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ সংসদীয় এলাকার প্রস্তাবিত সীমারেখা নিয়ে শুনানি চলছিল।
প্রতিনিধিদের মতে, শুনানি শুরু হয় বিএনপির সহকারী আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানার খসড়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনা দিয়ে। এরপর এনসিপি'র যুগ্ম প্রধান সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন, সেই সময়ে দ্বিপক্ষীয় বিরোধ তীব্রতর হয়ে ওঠে এবং সংঘর্ষে রূপ নেয়।
উত্তেজনা আরও বাড়লে ইসি'র কর্মকর্তারা হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এরপর সচিব শুনানি শেষ ঘোষণা করেন এবং সব অংশগ্রহণকারীকে কক্ষ ত্যাগ করার জন্য অনুরোধ করেন।
পরবর্তীতে এনসিপি'র আতাউল্লাহ অভিযোগ করেন যে, বিএনপির নেতা রুমিনসহ অন্যান্যরা তার উপর একটি 'পরিকল্পিত হামলা' চালিয়েছিল।
সেই দিনই এনসিপি ইসির কাছে একটি আনুষ্ঠানিক লিখিত অভিযোগ দাখিল করে। সেখানে আতাউল্লাহসহ বেশ কয়েকজন নেতা সই করেন।
চিঠিতে এনসিপি ইসিকে 'ফ্যাসিবাদী কালো আইনের ওপর দাঁড়িয়ে আছে' বলে উল্লেখ করে এবং রুমিন ফারহানা ও তার দলবলের বিরুদ্ধে 'ফৌজদারি ব্যবস্থা' নেওয়ার দাবি জানায়। তারা আরও বলেন, যদি ইসি নিরপেক্ষ থাকতে না পারে, তাহলে কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করে 'যোগ্য ব্যক্তিদের জন্য পথ খোলা উচিত'।
এদিকে, পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রুমিন এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
রুমিন ফারহান বলেন, 'সমস্যা হলো, তিনি আমার পরিচিত মুখ নন। আমি জানি না তিনি এনসিপি থেকে এসেছেন নাকি জামাত থেকে। তবে সাদা পাঞ্জাবি পরা তিন প্রথমেই এসে আমাকে ধাক্কা দেন। এরপর, অবশ্যই, আমার লোকরা বসে থাকেনি। আমি একজন নারী। আমার লোকদের উপর আক্রমণ হলে তারা প্রতিক্রিয়া জানায়। এটা সহজ।'
পরবর্তীতে, এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ একটি সংবাদ সম্মেলনে রুমিনকে 'বিএনপির আওয়ামী লীগ বিষয়ক সম্পাদক' হিসেবে উল্লেখ করে ইসিকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
হাসনাত বলেন, 'আমরা চাই নির্বাচন কমিশনকে লক্ষ্যভিত্তিক ও নিরপেক্ষ আচরণ করতে দেখতে চাই। অন্যথায়, এর পুনর্গঠনের দাবিই শক্তিশালী হবে।'
বুধবার বিকালে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবারে বলেন ইসির সচিব আখতার আহমেদ, 'এটা অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত, না হওয়াটা বাঞ্চনিয় ছিল, এটাও আমাদের জন্য শিক্ষা।'