পরিবারগুলোর সবচেয়ে বড় উদ্বেগ মূল্যস্ফীতি, শিক্ষায় বাড়তি ব্যয় নিয়ে: জরিপ

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, একইসঙ্গে শিক্ষার ব্যয়ও বেড়েছে বাংলাদেশে। আর এই দুটি বিষয়কেই সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হিসেবে দেখছে অধিকাংশ পরিবার। আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) প্রকাশিত এক জরিপের ফলাফলে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, ৬৯.৫৯ শতাংশ পরিবার মনে করে মূল্যবৃদ্ধি তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা; এর ফলে স্পষ্ট হয়েছে যে, দৈনন্দিন জীবনে মূল্যস্ফীতির চাপ কতটা তীব্র হয়ে উঠেছে।
শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়েও অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
জরিপের আওতায় আসা প্রায় ৬৪.৫৫ শতাংশ পরিবার জানায়, শিশুদের শিক্ষার মান নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন, এর মধ্যে ৫২.০১ শতাংশ বিশেষভাবে শিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধিকে উল্লেখ করেছে। এছাড়া ২৮.৭৬ শতাংশ পরিবার ভবিষ্যতে সন্তানের বিবাহ ব্যয় নিয়েও চিন্তিত।
অন্যান্য অর্থনৈতিক দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছে আয়ের ঘাটতি (যা ৪০.২২ শতাংশ পরিবার উল্লেখ করেছে) এবং মূলধনের অভাব (২৮.৬৬ শতাংশ পরিবার)।
অর্থনৈতিক চাপের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে উদ্বেগও ব্যাপক।
৫১.৬৫ শতাংশ পরিবার ওষুধের চড়া দামকে, ৫০.৬৪ শতাংশ উচ্চ চিকিৎসা ব্যয়কে, এবং ৪৮.৭ শতাংশ চিকিৎসকের দেওয়া অপ্রয়োজনীয় মেডিকেল টেস্টকে বোঝা হিসেবে দেখছে।
সামাজিক সমস্যাগুলোও পরিবারিক পর্যায়ের শীর্ষ উদ্বেগের তালিকায় রয়েছে। এর মধ্যে মাদকাসক্তি (৫৫.৯৭ শতাংশ) এবং কিশোর অপরাধ (৫৪.৫২ শতাংশ) সবচেয়ে বড় উদ্বেগ, এরপর রয়েছে পারিবারিক ও পাড়াপড়শির বিরোধ (৪৩.১৩ শতাংশ)।
রাজনৈতিক ও সুশাসনসংক্রান্ত সমস্যাও কম নয়। প্রায় অর্ধেক উত্তরদাতা (৪৯.০৫ শতাংশ) বলেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব উদ্বেগের বিষয়। এছাড়া ৩৭.১১ শতাংশ দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ এবং ৩৬.২৩ শতাংশ মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সীমাবদ্ধতাকে সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সুশাসনের ক্ষেত্রে ৪৫.৪৩ শতাংশ আইনশৃঙ্খলার অবনতিকে, ৪০.৫৪ শতাংশ আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতিকে এবং ৩৩.১৩ শতাংশ ঘুষ ও চাঁদাবাজিকে উদ্বেগ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
দেশের আট হাজারেরও বেশি পরিবারের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এ জরিপটি প্রকাশ করেছে, মুল্যাস্ফীতি, সীমিত কর্মসংস্থান ও সুশাসনের দুর্বলতা কীভাবে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন এবং জনমতকে প্রভাবিত করছে তার একটি স্পষ্ট চিত্র।