সরকারি ঘোষণায় কমানো হলেও পাইকারিতে বেড়েছে পাম অয়েলের দাম

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় সরকার সম্প্রতি খোলা পাম অয়েলের লিটারপ্রতি দাম ১৯ টাকা কমিয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করে। কিন্তু ঘোষণার পর সেই দাম খুচরা বাজারে কার্যকর হয়নি। উল্টো পাইকারি বাজারে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে দাম।
দেশের ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার—চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে এক মাসের ব্যবধানে মণপ্রতি পাম অয়েলের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০০ টাকা। বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে ক্রেতাদের প্রতি লিটার পাম অয়েলের জন্য গুনতে হচ্ছে ১৮০ টাকা, যা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ৩০ টাকা বেশি।
পাম অয়েলের দাম বাড়ায় অন্য ভোজ্যতেল বাজারদরেও প্রভাব পড়েছে। খাতুনগঞ্জে সয়াবিনের দাম এক সপ্তাহে মণপ্রতি ১০০ টাকা বেড়ে সাড়ে ৬ হাজার টাকায় উঠেছে।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানগুলো (সংবিধিবদ্ধ সরবরাহকারী) ইচ্ছাকৃতভাবে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। এতে পাইকারি পর্যায়ে মণপ্রতি ১৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। শনিবার খাতুনগঞ্জে মণপ্রতি পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ৫,৯৮০ থেকে ৬ হাজার টাকায়। মাত্র এক সপ্তাহ আগেও এ দাম ছিল ৫,৮৪০ টাকা।
বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত পাম অয়েল ও সয়াবিনের বুকিং দামের চিত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সর্বশেষ জুলাইয়ে পাম অয়েলের দাম দাঁড়িয়েছে টনপ্রতি ৯৭৫ ডলার। জুনে এ দাম ছিল ৯৩৫ ডলার, এবং মে মাসে ছিল ৯০৮ ডলার। অপরদিকে সয়াবিনের বুকিং দাম মে মাসে ছিল টনপ্রতি ১,১৬৩ ডলার, জুনে ১, ১৭৮ ডলার এবং জুলাইয়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৩০৭ ডলারে। জুন থেকে জুলাইয়ের মধ্যে সয়াবিনের দাম টনপ্রতি ১২৯ ডলার বাড়লেও পাম অয়েলের দাম বেড়েছে ৪০ ডলার।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মওলা বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে দেশে ভোজ্যতেলের দাম বাড়তি। পাম অয়েলের আন্তর্জাতিক দাম কমে যাওয়ায়—দেশের বাজারেও সমন্বয় করা হয়েছে। কিন্তু দাম কমানোর পর মিল গেটে সরবরাহ কমিয়ে দেয়ার পাশাপাশি ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানগুলো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে।'
এবিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রাজ্জাক টিবিএসকে বলেন, 'বাজারের সার্বিক বিবেচনায় সরকার তেলের দাম নির্ধারণ করেছে। যদি এর ব্যত্যয় ঘটে ট্যারিফ কমিশনের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'