চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার ধারণক্ষমতা বেড়েছে ১০ শতাংশ

দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামের কনটেইনার ধারণক্ষমতা ১০ শতাংশ বাড়িয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ফলে বন্দরের ইয়ার্ডে কনটেইনার রাখার মোট সক্ষমতা ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউএস থেকে বেড়ে ৫৯ হাজারে দাঁড়িয়েছে।
বন্দর কর্মকর্তারা জানান, কর্তৃপক্ষ গত ১৯ আগস্ট এই তথ্য হালনাগাদ করেছে। তারা আরও বলেন, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য বন্দরে জট কমানো এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম আরও মসৃণ করা।
সিদিএ সেক্রেটারি মো. ওমর ফারুক টিবিএসকে বলেন, 'বন্দরকে আরও ব্যবস্যাবান্ধব করে তোলা এবং ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে চলমান প্রচেষ্টারই অংশ এই উদ্যোগ।'
তিনি আরও বলেন, 'ধারণক্ষমতা বাড়ার ফলে বন্দরে কনটেইনার জট আর কোনো সমস্যা হবে না। গত কয়েক মাসে চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালন দক্ষতা ও সেবার মান অনেক উন্নত হয়েছে।'
ধারণক্ষমতা বাড়ানোর এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি নতুন ইয়ার্ড নির্মাণ ও পুরোনো স্থাপনাগুলো সংস্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পুরোনো নিলাম ইয়ার্ড, গাড়ি রাখার স্থান, ব্যাগেজ শেড ও এক্স-ওয়াই শেডের উন্নয়ন। এসব সংযোজনের ফলে বন্দর এখন আগের চেয়ে বেশি কনটেইনার পরিচালনা করতে সক্ষম।
চলতি বছরের শেষ নাগাদ এই ধারণক্ষমতা আরও বাড়িয়ে প্রায় ৬২ হাজার টিইইউএসে উন্নীত করার পরিকল্পনাও রয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই ৪৭- ৪৮ হাজার টিইইউএস কনটেইনার ব্যবস্থাপনা করে। এছাড়া দৈনিক কনটেইনার জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের সংখ্যা গড়ে ১০টি থেকে বেড়ে ১২-১৩টিতে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে আমদানি-রপ্তানি উভয় ক্ষেত্রেই পণ্য ডেলিভারির সময় কমে এসেছে, যা রপ্তানির লিড টাইম কমিয়ে এনেছে।
সিডিএ কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, ইয়ার্ডের ধারণক্ষমতা বাড়ায় রপ্তানিমুখী প্রায় ৬ হাজার টিইইউএস কনটেইনারের জন্য প্রি-স্ট্যাকিংয়ের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়েছে।
তবে কিছু চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে। লোকোমোটিভের স্বল্পতার কারণে রেল পরিবহনে বিলম্ব হচ্ছে, যা ঢাকা আইসিডিতে পণ্য পরিবহনে চাপ বাড়িয়েছে।
এছাড়া নিলামযোগ্য প্রায় ১০ হাজার কনটেইনার এবং ঢাকা আইসিডিগামী আরও ২ হাজার কনটেইনার এখন ক্লিয়ারেন্সের অপেক্ষায় রয়েছে।
এসব চাপ সত্ত্বেও কর্মকর্তারা বলছেন, বন্দরের কার্যক্রম স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে জাহাজগুলোর টার্নঅ্যারাউন্ড টাইম (বন্দরে পৌঁছানো থেকে ছেড়ে যাওয়া পর্যন্ত মোট সময়) কমে ২.৫৮ দিনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে বহির্নোঙরে অপেক্ষার সময় মাত্র দুই দিনে নেমে এসেছে।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মাত্র চারটি কনটেইনার জাহাজ ও একটি সাধারণ কার্গো জাহাজ বার্থের জন্য অপেক্ষায় ছিল।
সিডিএর তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ডে ৪৪ হাজার ১৩৩ টিইইউএস কনটেইনার ছিল।