দুইদিনে সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া ১ লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর এলাকায় নজিরবিহীন লুটপাটের পর লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে অভিযানে নেমেছে প্রশাসন। গত দুইদিনে প্রায় ১ লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার হয়েছে। এরমধ্যে অর্ধেক ইতোমধ্যেই সাদাপাথরে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাকিগুলো প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া আরও ৪৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়। দিনভর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এসব পাথর জব্দ করা হয়।
এদিকে, সিলেটের আরেক পর্যটন কেন্দ্র জাফলং থেকে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারেও অভিযান চলছে। গত দুইদিনে জাফলং থেকে লুট হওয়া ৮ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেলের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জে মোট প্রায় ১ লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ হয়েছে। উদ্ধারকৃত পাথর পর্যায়ক্রমে সাদা পাথরে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (গোপনীয় শাখা, মিডিয়া সেল) মো. মাসুদ রানা জানান, শুক্রবার কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়।
পাথর ব্যবসায়ীরা অভিনব কৌশলে লুট হওয়া পাথর লুকিয়ে রাখছেন বলেও জানা গেছে। শুক্রবার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসন কলাবাড়ি এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় মাটিচাপা অবস্থায় বিপুল পরিমাণ পাথর উদ্ধার হয়। এরমধ্যে ৭ ট্রাক পাথর সাদাপাথর এলাকায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং আরও আনুমানিক ৫,০০০ ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে, যা আজ শনিবার ফেরত পাঠানো হবে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (রাজস্ব শাখা, জেলা ব্র্যান্ডিং ও পর্যটন সেল) মাহমুদ আশিক কবির জানান, "কলাবাড়িতে ক্রাশার মালিকরা মাটির নিচে পাথর মজুত করেছিলেন, সেখান থেকে সাত ট্রাক পাথর ফেরত দেওয়া হয়েছে এবং পাঁচ হাজার ঘনফুট পাথর প্রতিস্থাপনের জন্য রাখা হয়েছে।"
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিনের অভিযানে জাফলংয়ের পিয়াইন নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থান থেকে ৮,৫০০ ঘনফুট লুট হওয়া পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা পাথর নৌকাযোগে জাফলং জিরোপয়েন্টে ফেলে পুনঃপ্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৯টায় গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারীর নেতৃত্বে প্রশাসন, পুলিশ ও বিজিবির সমন্বয়ে এই যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন সংগ্রাম বিওপির ক্যাম্প কমান্ডার শহিদুল ইসলাম, জাফলং বিট পুলিশের এএসআই মোবারক হোসেনসহ পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা।
ইউএনও রতন কুমার অধিকারী জানান, "জাফলংয়ের জিরোপয়েন্ট থেকে কিছু দুষ্কৃতকারী রাতের অন্ধকারে ও বৃষ্টির মধ্যে পাথর সরিয়ে ফেলছিল। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত অভিযান চালিয়ে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ ও বিজিবির টহল জোরদার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সাড়ে ৮ হাজার ঘনফুটের বেশি পাথর উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।"
তবে পাথর লুটপাটের সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করা যায়নি বলে জানান তিনি।