শেখ হাসিনার সর্ব্বোচ্চ শাস্তি চাইলেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ জুনায়েদের বাবা

রাজধানীর চানখাঁরপুলে জুলাই আন্দোলনে শহীদ শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের বাবা শেখ জামাল হাসান জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন।
আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ জবানবন্দি দিতে গিয়ে তিনি এ দাবি করেন।
ট্রাইব্যুনালে শেখ জামাল দাবি করেন, তার ছেলেকে এপিবিএনের সাবেক কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন গুলি করে হত্যা করেছেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ জামালসহ দুজন সাক্ষী জবানবন্দি দেন। এনিয়ে এখন পর্যন্ত এ মামলায় তিনজন সাক্ষী জবানবন্দি দিলেন।
এ মামলার আসামিদের মধ্যে আরও রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান।
আসামিদের মধ্যে শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, সাবেক কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাকে এজলাসের কাঠগড়ায় হাজির করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া গত ৫ আগস্টের একটি ভিডিও ফুটেজে এপিবএন সদস্য সাবেক কনস্টেবল সুজন হোসেনকে দেখা যায়। জেরার একপর্যায়ে সুজনকে চিহ্নিত করেন জামাল।
তিনি বলেন, 'গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার একটু আগে চানখাঁরপুল এলাকায় শহীদ জুনায়েদের (মোস্তাকিম) মরদেহ বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন মিটফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।
জবানবন্দিতে জামাল বলেন, ৫ আগস্ট সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে ১৪ বছর বয়সি তার একমাত্র ছেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। সেদিন বেলা ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে তার শ্যালক ফোন করে ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানান। পরে জুনায়েদকে তার বন্ধুরা রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ''মেহেদীকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকেরা এও বলেছিলেন, 'মরদেহ নিয়ে যান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে লাশ হাসপাতালে রাখা যাবে না। তাড়াতাড়ি নিয়ে না গেলে মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমানে দিয়ে দেব। বুড়িগঙ্গায় লাশ ফেলে দেওয়ার কথাও বলেন চিকিৎসকেরা'।''
জবানবন্দি দেওয়ার একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন জামাল। বলেন, তার এক মেয়ে আছে। আর একমাত্র ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। ছেলেকে হারিয়ে তিনি ও তার স্ত্রী পাগলের মতো জীবনযাপন করছেন।
এ সময় অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন শেখ জামাল।