সিলেটে রায়হান হত্যা: জামিনে মুক্ত প্রধান আসামি এসআই আকবর

সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনের পর নিহত রায়হান আহমদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তী জামিন পেয়েছেন।
রোববার (১০ আগস্ট) সকালে জামিন পাওয়ার পর ওইদিন সন্ধ্যায় তিনি সিলেট মেট্রোপলিটন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। সোমবার (১১ আগস্ট) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওই কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক।
তিনি বলেন, 'উচ্চ আদালত থেকে নিম্ন আদালত হয়ে জামিনের কাগজ গতকাল (রোববার) আমাদের কাছে পৌঁছায়। পরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেলেই এসআই আকবরকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যার দিকে তিনি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে বেরিয়ে যান।'
তিনি আরও জানান, এর আগে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন এসআই আকবর। গত ফেব্রুয়ারি মাসে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর কার্যক্রম শুরু হলে ২৫ মার্চ তাকে সেখানে আনা হয়। জামিনে মুক্তির আগ পর্যন্ত আকবর এই কারাগারেই ছিলেন।
এদিকে, আকবরের জামিনের খবর পেয়ে নিহত রায়হানের মা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, 'এখন এই আসামি দেশ ত্যাগ করতে পারেন। তার জামিনে আমরা হতাশ হয়েছি।'
রায়হানের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে এবং রায় ঘোষণার প্রস্তুতি চলছিল। তবে প্রধান আসামির জামিন পাওয়ায় তার দ্রুত দেশ ত্যাগের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
মামলার অন্য আসামি আশেক এলাহীও কয়েক দিনের মধ্যে জামিন পেতে পারেন বলে জানা গেছে। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন আমেরিকায়, একজন ফ্রান্সে এবং দুইজন মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
২০২০ সালের ১০ অক্টোবর গভীর রাতে নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয়। পরদিন (১১ অক্টোবর) তিনি মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছিল। এ ঘটনার পর পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগে মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী।
পরে ১২ অক্টোবর এসআই আকবর হোসেনসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এসআই আকবরকে ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০২১ সালের ৫ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। সেখানে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে (৩২) প্রধান আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়।
অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী (৪৩), কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ (৩২), টিটু চন্দ্র দাস (৩৮), এসআই মো. হাসান উদ্দিন (৩২) ও এসআই আকবরের আত্মীয় এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান (৩২)।