৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়নের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ নয়, জানতে চাইল হাইকোর্ট
ব্যাংকবহির্ভূত ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) অবসায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিচারপতি আহমেদ সোহেলের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে পিপলস লিজিংয়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি টিবিএসকে বলেন, 'এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্তমানে নিয়োগকৃত বোর্ড বিদ্যমান রয়েছে। বোর্ড থাকাবস্থায় এভাবে অবসায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করা হলে আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছেন।'
এর আগে গত ৯ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি ও পর্যালোচনাবিষয়ক এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই নয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ বা অবসায়নের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
ওই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যান্য উপদেষ্টা ও সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, যে ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো: পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি), এফএএস ফাইন্যান্স, আভিভা ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স ও প্রিমিয়ার লিজিং। এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের পাওনা পরিশোধের জন্য সরকারের কাছে ৫ হাজার কোটি টাকা সহায়তা চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হয়ে এসব এনবিএফআই গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিষ্ঠানগুলো সমস্যায় ভুগছে।
তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চারটিই বহুল আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলমের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানও এই তালিকায় রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানের বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে জামানতের পরিমাণ খুবই নগণ্য। ফলে সেগুলোর ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো সম্ভাবনা দেখছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ কারণেই প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবন্ধন সনদ বা লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
