নোয়াখালীতে মাইক্রোবাস খালে পড়ে একই পরিবারের ৭ জন নিহতের ঘটনায় চালকের বিরুদ্ধে মামলা

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে চালকের ঘুমের কারণে মাইক্রোবাস খালে পড়ে সাতজন নিহত হওয়ার ঘটনায় মাইক্রোবাস চালক এনায়েত হোসেন আকবরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে ওমানপ্রবাসী মোহাম্মদ বাহার উদ্দিনের বাবা আবদুর রহিম বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লিটন দেওয়ান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, 'মামলাটি লক্ষ্মীপুর জেলাধীন চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানায় হস্তান্তর করা হবে এবং পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম সেখানে সম্পন্ন হবে।'
মাইক্রোবাস চালক এনায়েত হোসেন আকবর লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার হাজিরপাড়া ইউনিয়নের চরচামিতা এলাকার পাটওয়ারী বাড়ির মৃত ফয়েজ আহমেদের ছেলে। নিহত সাতজন একই উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী এলাকার বাসিন্দা।
বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরে লক্ষ্মীপুর-চৌমুহনী সড়কের আলাইয়াপুর ইউনিয়নের পূর্ব জগদীশপুর এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। ফেনী হয়ে লক্ষ্মীপুরে ফেরার পথে চালক 'ঘুমিয়ে' পড়লে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাসটি রাস্তার পাশে খালে পড়ে যায়।
আরও পড়ুন: মাইক্রোচালকের 'ঘুমে' স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের ৭ সদস্য হারালেন ওমান প্রবাসী বাহার
মাইক্রোবাসে থাকা বাহারের পরিবারের সাত সদস্য ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তারা হলেন—বাহারের মা মুর্শিদা (৫০), স্ত্রী কবিতা (২৫), কন্যা মীম (২), ভাইয়ের মেয়ে রেশমী (৯), লামিয়া আক্তার (৮), ছোট ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী (২৫) এবং বাহারের নানী ফয়জুন নেসা (৭০)। নিহতদের সবার বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের পশ্চিম চৌপল্লী গ্রামে।
এ দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যান প্রবাসী বাহার, তার শ্বশুর ইস্কান্দার মির্জা, মাইক্রোবাস চালকসহ আরও দুজন।
প্রবাসীর শ্বশুর ইস্কান্দার মির্জা জানান, 'চালক শুরু থেকেই ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন। বারবার অনুরোধ করেছিলাম, যেন বাজারে গাড়ি থামিয়ে বিশ্রাম নেন। তিনি কিছুক্ষণ থেমেও আবার গাড়ি চালাতে শুরু করেন, তখনো তার চোখে ঘুম। আমি নিষেধ করলেও তিনি শুনেননি। একপর্যায়ে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা তিনজন বের হতে পারলেও, বাকিরা আটকা পড়ে যান। রাতে চিৎকার করলেও কেউ শোনেনি। প্রায় দুই ঘণ্টা পর স্থানীয় কেউ ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে ভোর ৬টার দিকে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। তখনই সাতটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।'